![]()
চট্টগ্রাম বন্দরের ভবিষ্যৎ কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতার প্রায় ৬০ শতাংশ বিদেশি অপারেটরদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। পিপিপি (সরকারি-বেসরকারি অংশীদারি) কাঠামোর আওতায় গোপনীয় শর্তে ঢাকার এক হোটেলে স্বাক্ষরিত হয়েছে দুটি বড় টার্মিনাল পরিচালনার দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি।
ডেনমার্কের এপিএম টার্মিনালস লালদিয়া টার্মিনাল পরিচালনা করবে ৩৩ বছর, আর সুইজারল্যান্ডের মেডলগ এসএ পানগাঁও নৌ টার্মিনাল পরিচালনা করবে ২২ বছর। বিশেষজ্ঞ ও রাজনৈতিক দলগুলো প্রশ্ন তুলেছে—এত বড় চুক্তি কেন এত তাড়াহুড়ো করে সম্পন্ন হলো এবং কেন শর্তাবলি গোপন রাখা হলো।
চুক্তি নিয়ে সমালোচনা ও উদ্বেগ
অভিযোগ রয়েছে, লালদিয়ার জন্য আইএফসির প্রস্তাবিত ৬২ দিনের প্রক্রিয়া মাত্র দুই সপ্তাহে শেষ করা হয়েছে। ছুটির দিনেও দর-কষাকষি চলেছে বলে জানা যায়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বাম জোট ও ধর্মীয় সংগঠন চুক্তিকে জাতীয় নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্বার্থের জন্য হুমকি বলে উল্লেখ করছে। তারা দাবি করেছে—এভাবে বিদেশিদের হাতে নিয়ন্ত্রণ দিলে ভবিষ্যতে বড় মূল্য দিতে হতে পারে।
জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলাম চুক্তিকে ‘কৌশলগত সম্পদ হস্তান্তর’ বলে অভিহিত করে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। একইভাবে বিশেষজ্ঞ আনু মুহাম্মদ এই তাড়াহুড়োকে ‘চরম বিশ্বাসঘাতকতা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
বিদেশি অপারেটর ঢুকলে কী হতে পারে?
যদি পরিকল্পনা অনুযায়ী সব টার্মিনাল বিদেশিদের হাতে যায়, তাহলে পতেঙ্গা, এনসিটি, বে-টার্মিনালসহ বন্দরের অধিকাংশ কনটেইনার হ্যান্ডলিং বিদেশিরা করবে। এতে দেশের নিজস্ব নিয়ন্ত্রণ কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করেন অনেকে।
সরকারি যুক্তি
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, মালিকানা দেশেরই থাকবে; বিদেশিদের দেওয়া হচ্ছে শুধু নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্ব। তিনি বলেন, বিশ্বমানে উন্নত প্রযুক্তি, দক্ষতা ও দুর্নীতি কমাতে আন্তর্জাতিক অপারেটর দরকার। চুক্তির নথি প্রকাশ না করতে পারার কারণ হিসেবে তিনি আইনি সীমাবদ্ধতা ও ভবিষ্যৎ দরপত্রের ঝুঁকির কথা উল্লেখ করেন।
তার ভাষায়, “সরকারের নিবেদিত কর্মকর্তারা দিনরাত কাজ করে একটি বড় অগ্রগতি এনেছেন—এটা প্রশংসা পাওয়ার মতো।”
পাঠকের মন্তব্য