![]()
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো শেডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দিয়েছে। প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল বৈদ্যুতিক আর্ক ও শর্ট সার্কিট থেকে—এটি কোনো নাশকতার ঘটনা নয়।
আজ মঙ্গলবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনি প্রতিবেদনটি প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করেন এবং পরে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
তদন্তে উঠে এসেছে, কুরিয়ার শেডে বিভিন্ন সংস্থার জন্য ৪৮টি ছোট লোহার খাঁচার অফিস করা হয়েছিল, কিন্তু সেখানে ফায়ার অ্যালার্ম, স্মোক ডিটেক্টর, স্প্রিঙ্কলার বা হাইড্রান্ট—কোনো ধরনের প্রাথমিক অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। পাশাপাশি কাগজ মোড়ানো কাপড়ের রোল, রাসায়নিক, কম্প্রেসড পারফিউম ও বডি স্প্রে, ইলেকট্রনিক সামগ্রী, ব্যাটারি, ঔষধি কাঁচামালসহ দাহ্য উপাদান অগোছালোভাবে জমা ছিল, যা বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করেছিল।
তদন্ত কমিটি ৯৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণের পর নিশ্চিত হয়েছে যে আগুনের শুরু ছিল বৈদ্যুতিক আর্ক ও শর্ট সার্কিট থেকে। তুরস্ক, বুয়েট, অগ্নি নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ও সিআইডি ফরেনসিক দল এ তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
প্রেস সচিব আরও জানান, ২০১৩ সাল থেকে ওই এলাকায় সাতটি বড় অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে, যার অধিকাংশই প্রকাশ্যে আসেনি। তবুও সিভিল এভিয়েশন অথরিটির পর্যাপ্ত অগ্নি প্রতিরোধ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা সক্ষমতা গড়ে ওঠেনি।
তদন্ত কমিটি সুপারিশ করেছে—
- বিমানবন্দরের রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তার জন্য একটি স্বতন্ত্র বিমানবন্দর পরিচালনা কর্তৃপক্ষ গঠন,
- সিএএবিকে কেবল নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় রাখা,
- আন্তর্জাতিক মান অনুসারে বিপজ্জনক পণ্যের গুদাম স্থানান্তর,
- বিমান সংস্থার জন্য বিশেষ শ্রেণির ফায়ার স্টেশন স্থাপন,
- নিলামযোগ্য পণ্যের জন্য পৃথক কাস্টমস গুদাম নির্মাণ,
- এবং এপ্রোন এলাকায় কোনো ধরনের পণ্য সংরক্ষণ নিষিদ্ধ করা।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ অক্টোবর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো শেডে ভয়াবহ আগুন লাগে। তদন্ত প্রতিবেদনের সব প্রস্তাব প্রধান উপদেষ্টার কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে।
পাঠকের মন্তব্য