![]()
ঢাকার সাভারে তাজরীন ফ্যাশনের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ১৩ বছর পূর্তিতে নিহতদের স্মরণে সোমবার সকালে আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে আগের মতোই জড়ো হন নিহত শ্রমিকদের স্বজন, আহত শ্রমিক ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। পরিত্যক্ত ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে তারা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান, নিহতদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করেন এবং এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। পরে মানববন্ধনে অংশ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের এক জীবনের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন এবং দায়িত্বহীনতার বিচার দাবিতে আওয়াজ তোলেন।
আহত শ্রমিকরা জানান, অগ্নিকাণ্ডের পর পর্যাপ্ত চিকিৎসা না পাওয়ায় বেশ কয়েকজন সহকর্মী মৃত্যুবরণ করেছেন। অনেকেই এখনো শারীরিক ও মানসিক কষ্ট নিয়ে সামান্য বেতনে ঝুটের গোডাউনে কাজ করছেন। আহত শ্রমিক নাসিমা আক্তার বলেন, “১৩ বছর পরও ন্যায্য ক্ষতিপূরণ পাইনি। চিকিৎসা না পেয়ে আমাদের অনেকেই মারা গেছেন। এই দিনটি আমরা কখনো ভুলতে পারি না।”
শ্রমিক নেতারা অভিযোগ করে বলেন, তাজরীনের ঘটনার ১৩ বছর পেরিয়ে গেলেও বিচার হয়নি। নিহতদের পরিবার কষ্টে দিন কাটাচ্ছে এবং আহত শ্রমিকরা পঙ্গুত্ব নিয়ে জীবনের লড়াই চালাচ্ছেন। তারা দাবি করেন—ভবনটি ভেঙে শ্রমিকদের পুনর্বাসন বা একটি হাসপাতাল নির্মাণ করতে হবে এবং তাজরীনের মালিক দেলোয়ারকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র জানায়, ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর পরিকল্পিত অগ্নিসংযোগে ১১৪ শ্রমিক নিহত এবং ১৭২ জন গুরুতর আহত হন, অথচ এখনও দোষীদের বিচার হয়নি। সংগঠনের কেন্দ্রীয় আইনবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, “বিগত সরকার ন্যায়বিচার নিশ্চিত না করে বরং দায়ীদের পুরস্কৃত করেছে। বর্তমান সরকারও শুধু আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছে, বাস্তবায়ন হচ্ছে না।”
২০১২ সালের সেই অগ্নিকাণ্ডে মোট ১১৭ জন শ্রমিক প্রাণ হারান এবং প্রায় দুই শতাধিক শ্রমিক আহত হন—যাদের অনেকেই আজও ন্যায্য ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের অপেক্ষায়।
পাঠকের মন্তব্য