
হোয়াইট হাউস ইউক্রেনকে সতর্ক করে জানিয়েছে—‘থ্যাংকসগিভিং’-এর আগেই যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শান্তি পরিকল্পনায় সম্মতি না দিলে কিয়েভ ওয়াশিংটনের সমর্থন হারানোর ঝুঁকিতে পড়বে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে আলোচনার সঙ্গে যুক্ত পাঁচটি সূত্র।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর সচিব ড্যানিয়েল ড্রিসকল প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির হাতে ২৮ দফার একটি শান্তি প্রস্তাব তুলে দেন। ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও রুশ দূত কিরিল দিমিত্রিয়েভ যৌথভাবে পরিকল্পনাটি প্রস্তুত করেন। ফাঁস হওয়া তথ্য অনুযায়ী এতে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী উল্লেখযোগ্যভাবে ছোট করা এবং রাশিয়াকে কিছু অতিরিক্ত এলাকা ছেড়ে দেওয়ার মতো ‘রেড লাইন’ শর্ত রয়েছে।
শুক্রবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে জেলেনস্কি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই চাপ দেশটির ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন মুহূর্তগুলোর একটি। তার ভাষায়, এখন ইউক্রেনের সামনে দুটি পথ—“সম্মান হারানো অথবা গুরুত্বপূর্ণ মিত্রকে হারানোর ঝুঁকি নেওয়া।”
যদিও ট্রাম্প প্রশাসন সরাসরি সহায়তা কমিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র এখনও ইউরোপীয় অংশীদারদের মাধ্যমে অস্ত্র ও গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা তথ্য পাঠাচ্ছে। তবে আলোচনার সঙ্গে জড়িত দুই কর্মকর্তা জানিয়েছেন—প্রস্তাবে দ্রুত সই না হলে ওয়াশিংটন সব ধরনের সহায়তা প্রত্যাহার করতে পারে।
২৮ দফার পরিকল্পনায় রাশিয়ার দাবিগুলো—অতিরিক্ত ভূখণ্ড ছাড়, সেনাবাহিনী ছোট করা ও ন্যাটো থেকে পদত্যাগ—স্থান পেয়েছে। এরকম চাপ আগে কখনো ইউক্রেনের ওপর প্রয়োগ করা হয়নি বলে সূত্র জানায়। যুক্তরাষ্ট্র আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যেই চুক্তির কাঠামোয় সই চায়।
বৃহস্পতিবার কিয়েভে জ্যেষ্ঠ মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করেন। মার্কিন দূতাবাস বৈঠকটিকে ‘সফল’ বলে দাবি করেছে।
তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন জানিয়েছে—তাদের সঙ্গে ২৮ দফার এই পরিকল্পনা নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার, জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মের্ৎস ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। ইইউ পররাষ্ট্রনীতির প্রধান কাইজা কালাস জানান—তাদের অবস্থান সহজ: রাশিয়াকে দুর্বল করা এবং ইউক্রেনকে সমর্থন দেয়া।
যুক্তরাষ্ট্র দাবি করছে—পরিকল্পনাটি জেলেনস্কির ঘনিষ্ঠ সহযোগী, জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা কাউন্সিলের সচিব রুস্তেম উমেরভের সঙ্গে সমন্বয় করে চূড়ান্ত হয়েছে। তবে উমেরভ টেলিগ্রামে লিখেছেন—তিনি কোনো অনুমোদন দেননি; তার ভূমিকা ছিল কেবল বৈঠক আয়োজন ও প্রস্তুতি নেওয়ার। বৈঠক শেষে উমেরভ বলেন, সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন করে এমন কোনো প্রস্তাব কিয়েভ গ্রহণ করবে না।
পাঠকের মন্তব্য