![]()
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে স্বাক্ষরিত প্রায় দশটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি ও প্রকল্প বাতিল করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের মূল কারণ হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সামরিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নতুন দৃষ্টিভঙ্গি বিবেচিত হয়েছে। বাতিল হওয়া প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে ত্রিপুরা-চট্টগ্রাম রেল সংযোগ, ফেনী নদীর জল ব্যবস্থাপনা, আশুগঞ্জ-আগরতলা করিডোর, সিলেট-শিলচর লিঙ্ক, পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন সম্প্রসারণ, মিরসরাই ও মোংলা ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন (আইইজে) এবং ভারতের গ্রাস ডিফেন্স কোম্পানি গ্রিন রিচ শিপবিল্ডার্স ও ইঞ্জিনিয়ার্সের সঙ্গে একটি টাগ বোট চুক্তি।
সরকারের একজন উচ্চপর্যায়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ শাহজিব ভুইয়া জানিয়েছেন, এসব প্রকল্পের ব্যাপক বিশ্লেষণের পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ত্রিপুরা-চট্টগ্রাম রেললাইন, আশুগঞ্জ-আগরতলা করিডোর এবং ফেনী নদীর জল ব্যবস্থাপনা প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। কিছু প্রকল্প যেমন কুশিয়ারা নদীর জল ভাগাভাগি, অস্থায়ীভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে। এছাড়াও আদানি পাওয়ার থেকে বিদ্যুৎ আমদানি ও গঙ্গা নদীর জল ভাগাভাগি চুক্তি পুনর্বিবেচনার বিষয়েও আলোচনা চলছে।
ভারতের সঙ্গে জলবণ্টন ও রেল সংযোগ প্রকল্পগুলো দুই দেশের সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলেও সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রকল্পগুলোর ওপর নতুন মনোভাব দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে গঙ্গা ও তিস্তা নদীর জল ভাগাভাগি নিয়ে চলমান আলোচনা জটিলতার মধ্যে পড়েছে, যা বাংলাদেশের জলসম্পদ ও কৃষিক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে পারে।
এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে নেওয়া হলেও, এটি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ওপর কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন। তবে ভবিষ্যতে কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে এই সম্পর্ক পুনর্গঠন ও উন্নয়নের সম্ভাবনাও রয়েছে।
বাংলাদেশের জন্য এ সিদ্ধান্ত অর্থনৈতিক ও কৌশলগত গুরুত্ব বহন করে। দেশের স্বার্থ অনুযায়ী জলসম্পদ ব্যবস্থাপনা ও আন্তঃরাষ্ট্রীয় যোগাযোগের নতুন নীতি ও কাঠামো গড়ে তোলা প্রয়োজন হবে। এটি দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
পাঠকের মন্তব্য