![]()
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক (RMG) খাত টেকসই শিল্পায়নের পথে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অর্জন করেছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইউএসজিবিসি (U.S. Green Building Council) থেকে আরও পাঁচটি কারখানা পরিবেশবান্ধব ভবনের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি LEED (Leadership in Energy and Environmental Design) সার্টিফিকেশন অর্জন করেছে। এ নিয়ে দেশের মোট LEED-সার্টিফায়েড পোশাক কারখানার সংখ্যা দাঁড়াল ২৬৮, যা বৈশ্বিকভাবে সর্বোচ্চ।
নতুন স্বীকৃতি পাওয়া কারখানাগুলোর মধ্যে PAKIJA Knit Composite, Fashion Plus Ltd ও Gava Ltd পেয়েছে Platinum রেটিং, এবং Visual Knitwears Ltd ও Talisman Performance Ltd পেয়েছে Gold রেটিং। বর্তমানে বাংলাদেশে ১১৪টি প্লাটিনাম রেটেড পোশাক কারখানা রয়েছে, যা বিশ্বের যেকোনো দেশের তুলনায় বেশি।
LEED সার্টিফিকেশন পরিবেশবান্ধব নকশা, শক্তি ও পানি ব্যবস্থাপনার দক্ষতা, বর্জ্য নিয়ন্ত্রণ এবং টেকসই নির্মাণের ওপর ভিত্তি করে প্রদান করা হয়। এটি চারটি স্তরে দেওয়া হয়: Certified, Silver, Gold ও Platinum। বাংলাদেশের বেশিরভাগ কারখানাই রয়েছে এই সূচকের শীর্ষ দুটি স্তরে।
এই অর্জন শুধু পরিবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং আন্তর্জাতিক বাজারেও বাংলাদেশের অবস্থানকে শক্তিশালী করেছে। ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মতো বাজারে এখন ক্রেতারা পরিবেশবান্ধব উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। ফলে দেশের টেকসই কারখানাগুলো সরাসরি বিদেশি ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজের সুযোগ পাচ্ছে এবং নতুন অর্ডার ও বিনিয়োগ আসছে।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (BGMEA) জানিয়েছে, দেশের অনেক কারখানা এখন কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করছে, যা ভবিষ্যতের শিল্পায়নে বাংলাদেশের নেতৃত্ব আরও সুসংহত করবে।
বর্তমানে আরও ৫০টির বেশি কারখানা LEED সার্টিফিকেশনের জন্য আবেদন প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এটি অর্জিত হলে বাংলাদেশ বিশ্বে সবুজ শিল্পায়নের শীর্ষস্থান আরও শক্তভাবে ধরে রাখবে। তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা এখন শুধুমাত্র অর্থনৈতিক সাফল্যের গল্প নয়, বরং একটি পরিবেশবান্ধব উন্নয়নের রোল মডেল।