বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের বন্ধুত্ব নষ্ট হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক গোলাম মাওলা রনি। তার ভাষায়, বর্তমানে দুই দেশের সম্পর্ক এখন “দা-কুমড়ার মতো”।
সোমবার নিজের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত এক ভিডিওতে তিনি দাবি করেন, মার্কিন ডিপস্টেট পলিসিতে শেখ হাসিনা ছিলেন সবচেয়ে বড় বাধা। তাই তাকে সরিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ একটি ডিপস্টেট তৈরি করতে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুতি নিচ্ছে।
রনির বক্তব্যের মূল দিক
রনি বলেন—
-
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যে ঐতিহাসিক বন্ধুত্ব থাকলেও, ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর প্রথম বড় বিরোধ তৈরি হয় বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে।
-
বাইডেন প্রশাসন শেখ হাসিনা সরকারকে উৎখাত করেছে, এবং বাংলাদেশের ওপর সরাসরি কর্তৃত্ব নিয়েছিল।
-
মার্কিন ডিপস্টেট পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ডোনাল্ড লু ও পিটার হাসকে চাকরিচ্যুত করতে বাধ্য করেছিলেন ট্রাম্প, মোদিকে খুশি করার জন্য।
-
১৯৫৩ সাল থেকে বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি চলে আসছে “বার্মা অ্যাক্ট” অনুযায়ী। এর ধারাবাহিকতায় পাকিস্তান আমল থেকেই পার্বত্য চট্টগ্রামে অস্থিতিশীলতা বাড়ানো হয়।
-
সেখানে খ্রিস্টান মিশনারিদের মাধ্যমে অর্থ ও অস্ত্র সরবরাহ করে পাহাড়িদের স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখানো হয়েছিল।
-
১৯৯৬ সালের পার্বত্য শান্তি চুক্তি সত্ত্বেও সংকট পুরোপুরি শেষ হয়নি।
রোহিঙ্গা ইস্যু ও বর্তমান বাস্তবতা
রনি দাবি করেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট তৈরি করাও যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তর নীতির অংশ। তার মতে, শেখ হাসিনাই ছিলেন সেই নীতির প্রধান বাধা। তাই তাকে সরিয়ে ডিপস্টেট পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য যুক্তরাষ্ট্র চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়েছে।
তবে রনির মতে, এ প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ভারতের প্রত্যাশিত সহযোগিতা পাচ্ছে না। এ কারণেই ওয়াশিংটন-নয়াদিল্লির সম্পর্ক আজ টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
রনি উল্লেখ করেন, পাকিস্তান আমল থেকে শুরু করে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিচ্ছিন্নতাবাদ উসকে দেওয়া, শান্তিবাহিনীর আন্দোলন, এমনকি ১৯৯৬ সালের শান্তি চুক্তি—সবকিছুই মার্কিন কূটনৈতিক নীতির দীর্ঘ ধারাবাহিকতার অংশ।
তার মতে, আজকের সংকট কোনো হঠাৎ তৈরি হওয়া ঘটনা নয়; বরং এটি দীর্ঘদিনের একটি “ডিপস্টেট গেম”।
পাঠকের মন্তব্য