![]()
ই-বাংলাদেশ ডেস্ক
বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি স্টার্টআপ খাতের জন্য যে নতুন অর্থায়ন নীতিমালা ঘোষণা করেছে, তা সময়োপযোগী এবং দৃষ্টান্তমূলক। এটি শুধুমাত্র তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য অর্থায়নের পথ উন্মুক্ত করবে না—বরং এটি একটি প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতির প্রতীক, যা এই খাতের উদ্ভাবন, সাহস এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করার দিকেই ইঙ্গিত করে।
দীর্ঘদিন ধরে দেশের স্টার্টআপ উদ্যোক্তারা প্রথাগত ব্যাংকিং কাঠামোর সঙ্গে নিজেদের বাস্তবতার মধ্যে একটি বড় ফারাক অনুভব করছিলেন। সেই ব্যবধান ঘোচাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের এ উদ্যোগকে বলা যায় এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। ৫০০ কোটি টাকার পুনঃ অর্থায়ন তহবিল এবং মূলধন বিনিয়োগ তহবিল ঘোষণা করার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি দেশের অর্থনীতির নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
নীতিমালার আওতায় একটি স্টার্টআপ তার উন্নয়নের চারটি ধাপে মূল্যায়িত হবে এবং সেই অনুযায়ী স্বল্পসুদের ঋণ ও মূলধন বিনিয়োগ—উভয় ধরনের আর্থিক সহায়তা পাবে। এই কাঠামো একদিকে যেমন উদ্যোক্তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে, তেমনি স্টার্টআপ খাতে একটি টেকসই অর্থনৈতিক প্রবাহ সৃষ্টি করবে।
আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এই নীতিমালার ফলে এখন ব্যাংকগুলো নিজেদের মতো করে স্টার্টআপ মূল্যায়ন করতে পারবে। কে ঋণ পাবে আর কে পাবে না, সে সিদ্ধান্ত তারা বাস্তব ভিত্তিতে ও নিজস্ব ঝুঁকি বিশ্লেষণ অনুযায়ী নিতে পারবে। এটি বাজার অর্থনীতির একটি পরিপূর্ণ প্রকাশ।
এই নীতিমালা তৈরির প্রক্রিয়ায় স্টার্টআপ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (SAB) এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও পরামর্শদাতারা গঠনমূলক ভূমিকা পালন করেছেন। ২০২৪ সালের নভেম্বরে এই প্রক্রিয়ার সূচনা হয়েছিল ধারাবাহিক বৈঠক, খসড়া নীতিমালা এবং বাস্তবভিত্তিক সুপারিশ বিনিময়ের মাধ্যমে। সেই প্রচেষ্টারই ফল আজকের এই পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা।
এখন সময় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর সক্রিয়তার। নতুন এই কাঠামোর আলোকে তাদের অভ্যন্তরীণ নীতিমালায় দ্রুত পরিবর্তন আনা প্রয়োজন, যাতে এই সুযোগ উদ্যোক্তাদের কাছে বাস্তবায়িত হয় দ্রুততম সময়ের মধ্যে।
মেটা ডেসক্রিপশন (Meta Description):
বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন স্টার্টআপ ফাইন্যান্স নীতিমালায় ৫০০ কোটি টাকার তহবিল ঘোষণা। স্বল্পসুদের ঋণ ও মূলধন বিনিয়োগে স্টার্টআপ উদ্যোক্তারা পাচ্ছেন রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও টেকসই অর্থায়নের সুযোগ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগান্তকারী উদ্যোগ
বাংলাদেশ ব্যাংকের সদ্য ঘোষিত স্টার্টআপ অর্থায়ন নীতিমালা দেশের উদ্যোক্তাদের জন্য এক বিশাল মাইলফলক। এটি শুধুমাত্র অর্থায়নের নতুন পথ খুলে দিচ্ছে না, বরং তরুণ উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবকদের জন্য রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির একটি রূপও বহন করছে।
৫০০ কোটি টাকার তহবিল: স্বপ্ন বাস্তবের পথে
এই নীতিমালার আওতায় ৫০০ কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল এবং মূলধন বিনিয়োগ তহবিল চালু করা হয়েছে, যা দেশের অর্থনীতিতে একটি নবতর ধারা যোগ করবে। চারটি ধাপে বিভক্ত স্টার্টআপের উন্নয়ন চক্র অনুযায়ী উদ্যোক্তারা স্বল্পসুদের ঋণ ও ইক্যুইটি ইনভেস্টমেন্ট পাবে।
ব্যাংকিং কাঠামোয় লচিপূর্ণ রূপান্তর
এই নীতিমালার অন্যতম তাৎপর্য হলো—এখন ব্যাংকগুলো নিজেরা স্টার্টআপকে মূল্যায়ন করতে পারবে। অর্থাৎ, ঋণ অনুমোদনের সিদ্ধান্ত গ্রহণে ব্যাংকের স্বাধীনতা থাকছে। ফলে প্রথাগত ব্যাংকিং প্রক্রিয়ার জটিলতা অনেকটাই সহজ হবে।
নীতিমালা প্রণয়নে সক্রিয় অংশগ্রহণ
স্টার্টআপ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (SAB) এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগসমূহ ২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে ধারাবাহিকভাবে আলোচনা, খসড়া পর্যালোচনা ও সুপারিশ প্রদান করে এ নীতিমালাকে চূড়ান্ত করেছে।
বাস্তবায়নে প্রয়োজন ব্যাংকগুলোর প্রস্তুতি
এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর দ্রুত সাড়া। তাদের অভ্যন্তরীণ নীতিমালা এই কেন্দ্রীয় নির্দেশনার সাথে সামঞ্জস্য রেখে আপডেট করতে হবে। তবেই এই নীতির সুফল তরুণ উদ্যোক্তাদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হবে।