![]()
উগান্ডার কিয়াগেগওয়া জেলায় অবস্থিত Kyaka II Refugee Settlement পূর্ব আফ্রিকার অন্যতম বৃহৎ শরণার্থী আশ্রয়কেন্দ্র। যুদ্ধ, নিপীড়ন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাস্তুচ্যুত হাজার হাজার মানুষের আশ্রয়স্থল এই বসতি। একসময় যেখানে মানুষের প্রধান চ্যালেঞ্জ ছিল পর্যাপ্ত খাদ্য, নিরাপদ পানি ও জীবিকার অভাব, আজ সেই একই ভূমিতে শরণার্থীরা গড়ে তুলছেন টেকসই উন্নয়নের নতুন দৃষ্টান্ত।
কঠিন বাস্তবতার মাঝেই শুরু হলো “Climate-Smart Agriculture”। শরণার্থীরা সীমিত জমিতে হাইড্রোপনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে লেটুস, টমেটো, পালংশাকসহ বিভিন্ন সবজি উৎপাদন করছেন। কম পানি, কম জায়গা ও কম খরচে এই পদ্ধতিতে তারা নিশ্চিত করছে খাদ্যে স্বনির্ভরতা, পরিবারের পুষ্টি উন্নয়ন এবং বাজারে অতিরিক্ত পণ্য বিক্রির মাধ্যমে আয়।
শরণার্থী ও স্থানীয় সম্প্রদায়ের যৌথ উদ্যোগে গড়ে তোলা হয়েছে বৃক্ষ নার্সারি। এতে ক্ষয়িষ্ণু বনভূমি পুনরুদ্ধার, মাটির ক্ষয় রোধ এবং জ্বালানির জন্য গাছ কাটা কমানো সম্ভব হয়েছে। পাশাপাশি শরণার্থীরা বায়োওয়েস্ট থেকে পরিবেশবান্ধব ইকো-ব্রিকেট ও কম ধোঁয়াযুক্ত কুকস্টোভ তৈরি করে বনভূমি নির্ভরতা কমাচ্ছেন এবং নারীদের জন্য নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করছেন।
উগান্ডার National Agricultural Research Organisation (NARO) শরণার্থীদের উন্নতমানের বীজ ও কৃষি প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। এতে খাদ্য নিরাপত্তা শক্তিশালী হয়েছে এবং প্রযুক্তি-ভিত্তিক কৃষি জ্ঞান বৃদ্ধি পেয়েছে।
এই সব উদ্যোগের সম্মিলিত প্রভাব Kyaka II–কে রূপান্তরিত করেছে। এখন পরিবারগুলো খাদ্যে স্বনির্ভর, নারী ও যুবকদের জন্য নতুন জীবিকা ও উদ্যোক্তাবাদ, পরিবেশ সংরক্ষণে সততা এবং কমিউনিটি নেতৃত্বে সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত।
উপসংহার: Kyaka II–এর শরণার্থীরা আজ শুধু বেঁচে থাকার গল্প নয়, এটি প্রযুক্তি, উদ্ভাবন এবং কমিউনিটির অংশগ্রহণের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়নের একটি অনুপ্রেরণামূলক রূপান্তর। সঠিক জ্ঞান, সহযোগিতা এবং প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা থাকলে শরণার্থীরাও বৈশ্বিক উদাহরণের মতো পরিবর্তনের নেতৃত্ব দিতে পারে।
পাঠকের মন্তব্য