![]()
অ্যামাজন ৫ লাখ কর্মীকে রোবট দিয়ে প্রতিস্থাপনের পরিকল্পনা করছে, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বৃহৎ কর্মসংস্থান পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। নিউইয়র্ক টাইমসের অভ্যন্তরীণ নথি ও কর্মীদের সাক্ষাৎকার অনুযায়ী, সিয়াটলভিত্তিক ই-কমার্স জায়ান্টটি তার কার্যক্রমের ৭৫ শতাংশ স্বয়ংক্রিয় করার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। ২০২৫ থেকে ২০২৭ সালের মধ্যে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে কোম্পানি আনুমানিক ১২.৬ বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করতে পারবে।
অ্যামাজনের বড় আন্তর্জাতিক গুদামগুলোতে ইতিমধ্যেই রোবট ব্যবহার শুরু হয়েছে। লুইজিয়ানার শ্রেভপোর্টে নতুন স্থাপনায় ১,০০০-এর বেশি রোবট প্যাকিং ও শিপিংয়ের অধিকাংশ কাজ করছে, যেখানে মানবকর্মীর সংখ্যা ২৫ শতাংশ কমেছে। ২০২৬ সালের মধ্যে কর্মীসংখ্যা অর্ধেকে নামানোর এবং ২০২৭ সালের শেষ নাগাদ এই মডেল প্রায় ৪০টি স্থাপনায় ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। যদিও বিশ্বের ১৫ লাখেরও বেশি কর্মী নিয়োজিত, স্বয়ংক্রিয়তার কারণে মানবশক্তির প্রয়োজন কমে আসবে।
জনসংযোগ ও কৌশলগত শব্দ ব্যবহারে, অ্যামাজন ‘রোবট’, ‘এআই’ বা ‘অটোমেশন’ শব্দের পরিবর্তে ‘অ্যাডভান্সড টেকনোলজি’ এবং ‘কোবট’ ব্যবহার করছে, যাতে কর্মী ছাঁটাইয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া কমানো যায়। নতুন প্রযুক্তি নির্ভর চাকরি যেমন রোবট পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন, তবে সেই কাজে মানুষের সংখ্যা সীমিত থাকবে।
অ্যামাজন দাবি করে স্বয়ংক্রিয়তা পুনরাবৃত্তিমূলক কাজ থেকে শ্রমিকদের মুক্ত করবে এবং নতুন প্রযুক্তিনির্ভর চাকরির সুযোগ তৈরি করবে। তবে বাস্তবে এই চাকরি কম সংখ্যক মানুষকে আকৃষ্ট করবে এবং মানবশক্তি সাশ্রয়ের প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে। করোনা মহামারির পর থেকে নিয়োগ কমানো এবং ২০২৫ সালে স্থায়ীভাবে ২৫ হাজারের বেশি কর্মী ছাঁটাই করা এই প্রবণতার ইঙ্গিত দেয়।
ভবিষ্যতে বিক্রয় দ্বিগুণ করার পরিকল্পনায়, স্বয়ংক্রিয়করণের মাধ্যমে কর্মীসংখ্যা বৃদ্ধির প্রয়োজন কমবে। ই-কমার্সের উন্নত প্রযুক্তি, স্বয়ংক্রিয় গুদাম ব্যবস্থা, রোবট ও এআই ব্যবহার কোম্পানির লজিস্টিক খরচ কমিয়ে, দ্রুত ও দক্ষ পরিষেবা নিশ্চিত করবে। তবে এতে কম দক্ষ শ্রমিকের কাজ কমে যাবে, আর প্রযুক্তিনির্ভর উচ্চ দক্ষ কর্মসংস্থান বাড়বে।
সংক্ষেপে, অ্যামাজনের এই বিশাল স্বয়ংক্রিয়করণ পরিকল্পনা বিশ্বব্যাপী ই-কমার্স ও কর্মসংস্থানে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে। বাংলাদেশের ব্যবসায়িক ও প্রযুক্তি পরিবেশে এ ধরনের পরিবর্তনের প্রভাব এবং কর্মজীবী শ্রেণির অভিযোজন নিয়ে ভবিষ্যতে আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।
পাঠকের মন্তব্য