আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়ায় এগিয়ে যাচ্ছে। এই মাসের মধ্যেই অন্তত ২০০ আসনে একক প্রার্থীকে গ্রিন সিগন্যাল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি, যাতে প্রার্থীরা আগাম নির্বাচনী প্রস্তুতি নিতে পারেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বিকালে রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন,
“প্রত্যেক আসনে একাধিক যোগ্য প্রার্থী রয়েছেন। তবে শরিক দলগুলোর সঙ্গেও আলোচনা করে চূড়ান্ত মনোনয়ন নির্ধারণ করতে হয়। যারা মনোনয়ন পাবেন না, তাদেরও দলের অন্য কাজে মূল্যায়নের সুযোগ থাকবে।”
শরিকদের গুরুত্ব ও ৩১ দফা বাস্তবায়ন
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, বিএনপি ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের শরিক এবং গণতন্ত্রের পক্ষে থাকা সব রাজনৈতিক শক্তিকে সঙ্গে নিয়ে ৩১ দফা বাস্তবায়নে কাজ করবে।
“জোট গঠন ও সরকার গঠনের ক্ষেত্রেও শরিকদের যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হবে,”
বলেন তিনি।
দলের পরিকল্পনা অনুযায়ী, শরিক দলগুলোর জন্যও প্রয়োজনীয় সংখ্যক আসন ছাড় দেওয়া হতে পারে।
দলীয় নেতৃত্বে তারেক রহমানের ভূমিকা
দলীয় নেতৃত্ব প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন,
“তারেক রহমান দিনরাত নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন, পরামর্শ নিচ্ছেন—এটি নেতৃত্বের গুরুত্বপূর্ণ দিক। মনোনয়ন প্রক্রিয়াও সেই আলোচনার ভিত্তিতেই এগোচ্ছে।”
তিনি আরও জানান, বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আসন্ন নির্বাচনে অংশ নেবেন, তবে তিনি কোন আসন থেকে প্রার্থী হবেন তা এখনো নির্ধারিত হয়নি।
“বাংলাদেশের যেকোনো আসন থেকেই তিনি নির্বাচন করতে পারেন,” বলেন তিনি।
খালেদা জিয়ার বিষয়ে অবস্থান
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আগামী নির্বাচনে অংশ নেবেন কি না, সে বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন,
“আমরা আশা করছি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তাঁর শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে নিজেই সিদ্ধান্ত নেবেন। আমরা চাই তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুন।”
জোট রাজনীতির বর্তমান অবস্থা
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
“সব দলের সঙ্গেই যোগাযোগ আছে, এমনকি এনসিপির সঙ্গেও রাজনৈতিক যোগাযোগ বজায় রয়েছে। তবে এখনই জোট গঠন বিষয়ে কিছু বলার সময় আসেনি।”
বিশ্লেষণমূলক প্রেক্ষাপট
বিএনপির এই সিদ্ধান্ত তাদের সাংগঠনিক প্রস্তুতিকে ত্বরান্বিত করবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। আগাম প্রার্থী নির্ধারণ হলে মাঠপর্যায়ের প্রচার, ভোটার সংযোগ ও জোট সমন্বয় আরও গতিশীল হবে।
তবে একই সঙ্গে শরিক দলগুলোর আসন বণ্টন নিয়ে ভেতরের সমন্বয় রক্ষা করাও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
পাঠকের মন্তব্য