“একসাথে হাতে হাতে—উত্তম খাদ্য ও উত্তম ভবিষ্যতের পথে” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আজ রাজধানীতে বিশ্ব খাদ্য দিবস ২০২৫ উদযাপন করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (BARC) অডিটোরিয়ামে আয়োজিত জাতীয় সেমিনারে সরকারি কর্মকর্তা, জাতিসংঘ সংস্থা, উন্নয়ন সহযোগী, কৃষক প্রতিনিধি, গবেষক, তরুণ ও বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মো. মাসুদুল হাসান, সচিব, মাননীয় উপদেষ্টা, খাদ্য মন্ত্রণালয়। তিনি বলেন,“দারিদ্র্যপীড়িত জনগোষ্ঠীর জন্য খাদ্য ও পুষ্টি সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকার Outlook 2050 অ্যাকশন প্ল্যান বাস্তবায়ন করছে। তবে সরকারের একার পক্ষে খাদ্যনিরাপত্তা অর্জন সম্ভব নয়—এটি সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সম্ভব।”
এফএও প্রতিনিধি (অ্যাক্টিং) দিয়া সানু বলেন,“বাংলাদেশে এখনও প্রায় ১২ শতাংশ মানুষ অপুষ্টিতে ভুগছে এবং ২০২৫ সালে ১৬ লাখেরও বেশি শিশু মারাত্মক অপুষ্টির ঝুঁকিতে রয়েছে। তাই শূন্য ক্ষুধার লক্ষ্য অর্জনে আরও দ্রুত ও সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।”
আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিলের (IFAD) কান্ট্রি ডিরেক্টর ভ্যালেন্টাইন আচাঞ্চো বলেন,
“আইএফএড ক্ষুদ্র কৃষকদের বাজার ও প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত করতে বিনিয়োগ, উদ্ভাবন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব দেয়।”
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের বলেন,“ফুড ওয়েস্ট ইনডেক্স রিপোর্ট অনুযায়ী ২০২২ সালে বাংলাদেশের খাদ্য অপচয়ের হার প্রতিবেশী ভারতসহ বেশ কয়েকটি উন্নত দেশের চেয়েও বেশি ছিল। খাদ্য অপচয় রোধে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।”
সেমিনারটির সভাপতিত্ব করেন মো. আবু জুবায়ের হোসেন বাবলু, অতিরিক্ত সচিব (গবেষণা wing), কৃষি মন্ত্রণালয়।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রফেসর ড. এ.এইচ. এম. সাইফুল ইসলাম, বিভাগীয় প্রধান, কৃষি অর্থনীতি বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ। তিনি খাদ্য উৎপাদন ও বন্টনে বিভিন্ন অংশীদারের মধ্যে সমন্বয়ের ওপর জোর দেন।
অনুষ্ঠানে এফএও আয়োজিত বিশ্ব খাদ্য দিবস পোস্টার প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের পুরস্কার প্রদান করা হয়।
বিশ্ব খাদ্য দিবস সম্পর্কে
প্রতি বছর ১৬ অক্টোবর পালিত হয় বিশ্ব খাদ্য দিবস—১৯৪৫ সালে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO)-এর প্রতিষ্ঠা দিবসের স্মরণে। দিবসটি ক্ষুধা ও অপুষ্টি নির্মূলে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং টেকসই, অন্তর্ভুক্তিমূলক কৃষি-খাদ্য ব্যবস্থা গঠনের আহ্বান জানায়। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ১৫০টিরও বেশি দেশে দিবসটি পালিত হচ্ছে।
পাঠকের মন্তব্য