টানা তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে আজ ১ সেপ্টেম্বর থেকে জেলে, বনজীবী ও দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হলো বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন।
বন বিভাগের অনুমতি সাপেক্ষে আজ থেকে সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারবেন জেলে ও পর্যটকরা। ফলে দীর্ঘ অপেক্ষার পর সুন্দরবন আবারও কোলাহলপূর্ণ হয়ে উঠছে। নদী–খাল–ছোট বড় ক্যানালজুড়ে জেলেদের নৌকা ও ট্রলারের শব্দ, আর পর্যটনকেন্দ্রিক ব্যবসায়ীদের সরব উপস্থিতিতে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরতে শুরু করেছে।
প্রস্তুত জেলে পল্লী ও পর্যটন ব্যবসা
শরণখোলা উপজেলার জেলে পল্লীতে এখন ব্যস্ত সময় কাটছে। ঠুকঠাক শব্দে নৌকা ও ট্রলার মেরামতে জেলেরা শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অনেকে আজকের মধ্যেই সুন্দরবনে প্রবেশের পরিকল্পনা করছেন।
অন্যদিকে, পর্যটন ব্যবসায়ীরাও দীর্ঘ বিরতির পর নতুন আশায় বুক বেঁধেছেন। ট্যুরিস্ট বোটগুলো মেরামত, রঙ ও সাজসজ্জার কাজ প্রায় শেষ। তাদের প্রত্যাশা, দেশি–বিদেশি পর্যটকের আগমন আবারও সুন্দরবনের প্রাণ ফিরিয়ে আনবে।
নিষেধাজ্ঞার কারণ
বন বিভাগ জানায়, প্রতিবছরের মতো এ বছরও ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত মৎস্য ও বন্যপ্রাণীর প্রজনন মৌসুমে সুন্দরবনে জনসাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।
জেলেদের দুর্দশা
তবে এ তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা জেলেদের জন্য কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। কয়রা, পাইকগাছা, দাকোপ ও শরণখোলার জেলেরা জানান, বিকল্প কর্মসংস্থানের অভাবে পরিবার নিয়ে অভাব-অনটনের মধ্যে দিন কাটাতে হয়েছে। অনেকে বাধ্য হয়ে শহরে গিয়ে খণ্ডকালীন কাজ করেছেন।
এক জেলে বলেন, “তিন মাস মাছ ধরা বন্ধ থাকায় সংসারে অশান্তি লেগেই ছিল। এ নিষেধাজ্ঞা দুই মাস করলে আমাদের জন্য ভালো হতো।”
প্রশাসনের তদারকি
পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের স্টেশন কর্মকর্তা মো. খলিলুর রহমান বলেন, “আজ থেকে সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এ উপলক্ষে গত ২৭ আগস্ট সংশ্লিষ্ট জেলে ও বনজীবীদের নিয়ে সচেতনতামূলক সভা করা হয়েছে। তাদেরকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”
পাঠকের মন্তব্য