পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ঐতিহাসিক সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্তে অনড় থাকার ইঙ্গিত দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শুক্রবার (১৫ আগস্ট) ভারতের ৭৮তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দিল্লির লালকেল্লা থেকে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, “রক্ত ও পানি একসঙ্গে প্রবাহিত হতে পারে না।”
মোদি জানান, এ বছরের এপ্রিলে কাশ্মীরে সংঘটিত হামলায় ২৬ পর্যটক নিহত হওয়ার ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করার পর ভারত চুক্তি স্থগিত করেছিল। তিনি বলেন, “যে সময় আমাদের কৃষকরা পানির অভাবে কষ্ট পেয়েছেন, সে সময় শত্রু দেশ আমাদের নদীর পানি দিয়ে সেচ দিয়েছে। এখন ভারতের পানির অধিকার থাকবে কেবল ভারত ও তার কৃষকদের।”
পাকিস্তানকে সতর্ক করে মোদি বলেন, সন্ত্রাসী ও সন্ত্রাসবাদকে সমর্থনকারীদের মধ্যে ভারত কোনো পার্থক্য করে না। ইসলামাবাদের ‘পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইল’ও আর সহ্য করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। পাকিস্তান এরই মধ্যে জানিয়েছে, তাদের পানির প্রবাহ আটকানোর যে কোনো প্রচেষ্টা তারা ‘যুদ্ধের ঘোষণা’ হিসেবে বিবেচনা করবে।
দুই প্রতিবেশির মধ্যে উত্তেজনা নতুন নয়, তবে সাম্প্রতিক হামলা ও পাল্টা সামরিক অভিযানের পর তা ভয়াবহ সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। ৬ মে দিবাগত রাতে ভারত পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, পাল্টা জবাব দেয় পাকিস্তানও—যা কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র সংঘাতে পরিণত হয়।
ভাষণে মোদি কৃষকদের স্বার্থ রক্ষার প্রতিশ্রুতি দেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের বিষয়েও পরোক্ষভাবে অবস্থান জানান। রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা অব্যাহত রাখায় যুক্তরাষ্ট্রের চাপ থাকা সত্ত্বেও ভারত নতি স্বীকার করবে না বলে স্পষ্ট করে দেন তিনি। “ভারত কৃষকদের স্বার্থে কোনো আপস করবে না,” বলেন মোদি।
এই অবস্থান কেবল রাজনৈতিক বার্তাই নয়, বরং দুই দেশের সম্পর্ক ও দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতার ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে। পানি ও খাদ্য নিরাপত্তা যেখানে কোটি মানুষের জীবন-জীবিকার সঙ্গে সরাসরি জড়িত, সেখানে এই বিরোধের সমাধান এখন আঞ্চলিক শান্তির জন্য অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।
পাঠকের মন্তব্য