![]()
পুলিশের ওপর ধারাবাহিক হামলা চলতে থাকলে সাধারণ মানুষকেই নিজেদের ঘরবাড়ি রক্ষা করতে হবে—এমন সতর্কবার্তা দিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) সকালে ডিএমপি গোয়েন্দা শাখার সাইবার সাপোর্ট সেন্টারের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন।
মিরপুরে ককটেল বিস্ফোরণ—আহত পুলিশ সদস্যসহ তিনজন
বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর পল্লবী থানার সামনে তিনটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। আকস্মিক বিস্ফোরণে থানায় দায়িত্বে থাকা সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) নুর ইসলামসহ মোট তিনজন আহত হন। ঘটনাটি এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন,
“ককটেল মেরে পুলিশ সদস্যকে আহত করা হয়েছে। এতে শুধু ব্যক্তি নয়—সমগ্র বাহিনীর মনোবল ক্ষতিগ্রস্ত হয়।”
তিনি আরও জানান, এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পুলিশের দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টি করে এবং জননিরাপত্তাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে।
হামলা বন্ধে কঠোর সতর্কবার্তা
সাম্প্রতিক সহিংসতা ও ধারাবাহিক নাশকতার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন,
“এ ধরনের দুর্বৃত্তায়ন কেউ করবেন না। এতে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। হামলা যদি চলতেই থাকে, তাহলে প্রত্যেককে নিজেদের ঘরবাড়ি নিজেরাই পাহারা দিতে হবে। কারণ এমন পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।”
তিনি জানান, এই ধরনের আক্রমণ শুধু পুলিশ নয়—সমগ্র সমাজের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে এবং জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়।
নাশকতায় গুলি চালানোর নির্দেশ—প্রসঙ্গ ব্যাখ্যা
গত ১৬ নভেম্বর একটি বেতার বার্তায় ডিএমপি কমিশনার গাড়িতে অগ্নিসংযোগ বা ককটেল নিক্ষেপের মতো নাশকতা প্রতিরোধে প্রয়োজনে গুলি চালানোর নির্দেশ দেন।
আজ সাংবাদিকরা এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন,
“নাশকতা করলে গুলি করার বিধান পুলিশ আইনেই রয়েছে। ককটেল মেরে নাশকতা করলে আইনের কঠোর প্রয়োগের নির্দেশনা দেওয়া আছে। উদ্দেশ্য কাউকে ভয় দেখানো নয়—জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা।”
সাইবার সাপোর্ট সেন্টারের উদ্বোধন—ডিজিটাল পর্যবেক্ষণে নতুন সক্ষমতা
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, সাইবার সাপোর্ট সেন্টার সাইবার অপরাধ দমন, ডিজিটাল সুরক্ষা এবং অনলাইন হুমকি মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। দ্রুততম সময়ে অভিযোগের তদন্ত ও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
জননিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশের আহ্বান
শেষে কমিশনার সাজ্জাত আলী বলেন,
“পুলিশ জনগণের নিরাপত্তা রক্ষায় কাজ করছে। কিন্তু সহিংসতা বাড়লে সমাজের শান্তি ব্যাহত হয়। তাই সবাইকে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানাই।”
তিনি আরও যোগ করেন, আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয়—সমগ্র সমাজের সম্মিলিত প্রয়াসেই নিরাপদ নগর গড়ে ওঠে।
পাঠকের মন্তব্য