![]()
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশব্যাপী কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এ লক্ষ্যে নির্বাচনের সময় আট দিনের জন্য প্রায় এক লাখ সেনা সদস্য মোতায়েন থাকবে। পাশাপাশি ড্রোন নজরদারি, বিচারিক ক্ষমতা প্রয়োগ, এবং গুজব প্রতিরোধে বিশেষ অ্যাপ চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
পুরো কার্যক্রমে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা।
নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে প্রস্তুতিমূলক সভা
গত ২০ অক্টোবর নির্বাচন ভবনে আয়োজিত আইনশৃঙ্খলা–সংক্রান্ত প্রস্তুতিমূলক সভায় এই পরিকল্পনা তুলে ধরে সেনাবাহিনী।
সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ. এম. এম. নাসির উদ্দিন। এতে অংশ নেন চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, সেনা, পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানসহ বিভিন্ন বাহিনীর প্রতিনিধি।
সভা শেষে কার্যবিবরণী সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থাগুলোতে পাঠানো হয়।
সেনা মোতায়েনের সময়সূচি ও দায়িত্ব
সভায় জানানো হয়, নির্বাচন চলাকালীন মোট আট দিন সেনা মোতায়েন থাকবে—
নির্বাচনের তিন দিন আগে,
নির্বাচনের দিন, এবং
পরবর্তী চার দিন পর্যন্ত।
এই সময়ের মধ্যে ৯০ হাজার থেকে এক লাখ সেনা সদস্য মাঠপর্যায়ে দায়িত্ব পালন করবেন।
সেনাবাহিনী বর্তমানে দেশের ৬২টি জেলায় ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ আইনের অধীনে সহায়তামূলক দায়িত্বে রয়েছে।
ড্রোন, কমান্ডো ও আকাশপথে প্রস্তুতি
সভায় আলোচনায় উঠে আসে—
-
সারা দেশে অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন,
-
গুরুত্বপূর্ণ সড়ক-মহাসড়কে টহল ও নজরদারি,
-
সংখ্যালঘুপ্রবণ ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা,
-
বিদেশি সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকদের জন্য পৃথক নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
এছাড়া ড্রোন ব্যবহার, হেলিপ্যাড প্রস্তুত রাখা, আর্মি এভিয়েশন মোতায়েন, এবং অঞ্চলভেদে কমান্ডো টিম প্রস্তুত রাখা সম্পর্কেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বিচারিক ক্ষমতা ও আইন প্রয়োগ
সরকার সেনাবাহিনীকে ইতোমধ্যে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়েছে। সভায় জানানো হয়, প্রয়োজনে বিচারিক ক্ষমতা দেওয়া হলে সেনা সদস্যরা নির্বাচনে আরও কার্যকরভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।
এমনকি প্রয়োজনে ভোটকেন্দ্রের ভেতরেও প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হতে পারে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে।
অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান
নির্বাচনপূর্ব সময়ে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, চিহ্নিত সন্ত্রাসী গ্রেফতার, ও গুজব প্রতিরোধে অ্যাপ চালু করার পরিকল্পনা নিয়েছে সেনাবাহিনী।
এই অ্যাপের মাধ্যমে ভুয়া তথ্য ও প্রোপাগান্ডা দ্রুত শনাক্ত করে প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পেশাদারিত্বের আশ্বাস
সভায় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়,
“বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নির্বাচনি দায়িত্বে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব, নিরপেক্ষতা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখবে।”
পাঠকের মন্তব্য