
নিউইয়র্কের নতুন মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পরই জোহরান মামদানি নিজের রাজনৈতিক লড়াইয়ের পরবর্তী অধ্যায় শুরু করেছেন—মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মামদানির সামাজিক কল্যাণভিত্তিক নীতিগুলো ট্রাম্প প্রশাসনের সম্ভাব্য পদক্ষেপের কারণে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।
বিজয় ভাষণে ট্রাম্পকে সরাসরি উদ্দেশ করে মামদানি বলেন, “তাহলে ডোনাল্ড ট্রাম্প, আমি জানি আপনি দেখছেন—ভলিউমটা একটু বাড়িয়ে দিন।” জবাবে ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, “…এবং শুরু হলো!”
৩৪ বছর বয়সী এই মেয়রকে ট্রাম্প বলেছেন “ডেমোক্র্যাটিক পার্টির কমিউনিস্ট ভবিষ্যৎ।” তিনি সতর্ক করেছেন, মামদানি শহর পরিচালনার দায়িত্ব নিলে নিউইয়র্কের ফেডারেল অর্থায়ন বন্ধ করে দেবেন। নির্বাচনের পরদিনই প্রেসিডেন্ট হুঁশিয়ারি দেন—মানুষ “নিউইয়র্ক ছেড়ে পালাবে।”
নিউইয়র্কের জন্য বরাদ্দ প্রায় ১৮ বিলিয়ন ডলারের অবকাঠামো প্রকল্পের অর্থায়ন স্থগিত করা, অভিবাসনবিরোধী অভিযান জোরদার করা এবং ফেডারেল তহবিল কমিয়ে দেওয়া—এসব উদ্যোগের মাধ্যমে ট্রাম্প এর আগেও শহরে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, ট্রাম্প আরও ফেডারেল তহবিল কমালে মামদানির সামাজিক কল্যাণমূলক প্রতিশ্রুতিগুলো—যেমন ভাড়ানিয়ন্ত্রিত আবাসন, বিনামূল্যে শিশুসেবা, ও নগর-পরিচালিত মুদির দোকান—বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হবে।
নীতিনির্ধারকরা বলছেন, নিউইয়র্কের বার্ষিক বাজেটের প্রায় ৭ শতাংশ আসে ফেডারেল তহবিল থেকে। যদি ট্রাম্প তা কমিয়ে দেন, তাহলে শহরের আবাসন, শিক্ষা ও সামাজিক সেবা খাতে মারাত্মক ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
তবুও, মামদানি আশাবাদী। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, নিউইয়র্ক ‘অভিবাসীদের শহর’ হিসেবেই থাকবে এবং ট্রাম্পের চাপের মুখেও শহরের মানবিক চরিত্র অক্ষুণ্ণ রাখা হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, নবনির্বাচিত মেয়র এখন ‘ট্রাম্প-প্রুফিং নিউইয়র্ক’ পরিকল্পনা তৈরি করছেন—যার অংশ হিসেবে শহরের আইন বিভাগে আরও ২০০ আইনজীবী নিয়োগ এবং ফেডারেল হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে আইনি প্রস্তুতি নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বব শাপিরো বলেন, “মামদানি সম্ভবত ট্রাম্পের প্রথম পদক্ষেপের অপেক্ষা করবেন, তারপর কৌশলগতভাবে প্রতিক্রিয়া দেবেন। তবে এক জিনিস নিশ্চিত—এই সংঘাত নিউইয়র্ক রাজনীতির পরবর্তী অধ্যায় নির্ধারণ করবে।”
পাঠকের মন্তব্য