![]()
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জানিয়েছে, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে ঘিরে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নানারকম মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর ও ভিত্তিহীন প্রচারণা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো হচ্ছে।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) বিকেল ৩টা ৩২ মিনিটে সেনাবাহিনীর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ বিষয়ে একটি সতর্কতামূলক বার্তা প্রকাশ করা হয়।
সেনাবাহিনীর অফিসিয়াল ঘোষণা
ফেসবুক বার্তায় সেনাবাহিনী বলেছে—
“ইদানিং পরিলক্ষিত হচ্ছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধানকে জড়িয়ে নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত বিভিন্ন অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। জনসাধারণকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন প্রচারণা থেকে সতর্ক থাকতে বিনীতভাবে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।”
পোস্টে আরও জানানো হয়, এর আগেও, ২০২৫ সালের ১৯ জুন, একই ধরনের ভুয়া তথ্য প্রচারের বিষয়ে একটি সতর্কতামূলক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল।
এবারও সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জনগণকে অনুরোধ জানানো হয়েছে যেন তারা যাচাই-বাছাই ছাড়া কোনো তথ্য বা পোস্ট শেয়ার না করেন, বিশেষত যেসব পোস্টে সেনাপ্রধান বা সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে রাজনৈতিক বা নির্বাচনী ইঙ্গিত দেওয়া হয়।
সংযুক্ত করা হলো ৬টি ভুয়া প্রচারণার স্ক্রিনশট
![]()
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রকাশিত পোস্টে দেখা গেছে, সেনাপ্রধানকে নিয়ে ৬টি ভুয়া প্রচারণার স্ক্রিনশট যুক্ত করা হয়েছে। এসব পোস্টে নির্বাচন নিয়ে বিভ্রান্তিকর দাবি, সেনাবাহিনীর সম্পৃক্ততা নিয়ে মনগড়া গল্প এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মন্তব্য রয়েছে।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে,
“এ ধরনের পোস্টগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর এবং রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচারের অংশ।”
দায়িত্বশীল তথ্যচর্চা : সবার নৈতিক দায়িত্ব
সেনাবাহিনীর এই আহ্বান কেবল একটি সতর্কতা নয়, বরং সামাজিক দায়িত্ববোধের প্রতিফলন।
বর্তমান সময়ে গুজব ও ভুয়া খবরের (Fake News) বিস্তার সামাজিক অস্থিরতা ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা বাড়িয়ে তুলতে পারে।
তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন—
“যখন সেনাবাহিনীর মতো গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভুয়া তথ্য ছড়ানো হয়, তখন তা শুধু একটি ব্যক্তিকে নয়, গোটা রাষ্ট্রীয় কাঠামোকেই বিভ্রান্ত করে।”
তাই জনগণকে যাচাই করা তথ্যের ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিশ্লেষণ : কেন এই ধরনের প্রচারণা বিপজ্জনক
গুজব বা ভিত্তিহীন প্রচারণা শুধুমাত্র সামাজিক বিভ্রান্তি নয়— এটি জাতীয় নিরাপত্তা, গণআস্থা এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি আঘাতও বটে।
নির্বাচনের মতো সংবেদনশীল সময়ে এমন ভুয়া তথ্য রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে পারে এবং বিদেশে বাংলাদেশের অবস্থান দুর্বল করতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে,
“এখন সময় এসেছে, নাগরিক হিসেবে প্রত্যেকে তথ্য যাচাইয়ের অভ্যাস গড়ে তোলার। না হলে মিথ্যা প্রচারণা সত্যের চেয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।”
সামাজিক সচেতনতার প্রয়োজন
মানুষের উচিত—
-
সেনাবাহিনীর মতো সংবেদনশীল বিষয়ে অফিসিয়াল সোর্স ছাড়া কিছু বিশ্বাস না করা।
-
ভুয়া পোস্ট বা ভিডিও দেখলে সেটি রিপোর্ট করা ও শেয়ার না করা।
-
বন্ধু ও পরিবারের মধ্যে ডিজিটাল সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
এভাবেই একটি দায়িত্বশীল ও সচেতন নাগরিক সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব, যেখানে সত্যিই “তথ্যই শক্তি” হয়ে দাঁড়ায়।
পাঠকের মন্তব্য