
আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, গণভোট ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। এ বিষয়ে খুব শিগগিরই ফয়সালা আসবে বলে তিনি জানান।
বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, “আজকের বৈঠকে ঐকমত্য কমিশনের দুটি বিকল্প নিয়ে আলোচনা হয়েছে—একটি হলো জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি করে গণভোটের মাধ্যমে তা কার্যকর করা, এবং অন্যটি হলো বিষয়টি নির্বাচিত সংসদের হাতে ছেড়ে দেওয়া। কোন পথটি গ্রহণযোগ্য হবে, সে বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা, আমরা তাঁকে সহায়তা করব।”
তিনি আরও বলেন, “দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না আসায় বিষয়টি এখন জটিল চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে। কোনো দল একতরফাভাবে অবস্থান নিতে চাইলে তা রাজনৈতিক অচলাবস্থা সৃষ্টি করবে।”
গণভোট প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা জানান, প্রাথমিকভাবে আলোচনা হলেও এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। কমিশনের প্রস্তাব বিষয়ে সরকারের অবস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “কমিশনের সুপারিশ আমরা পেয়েছি; কীভাবে তা বাস্তবায়ন হবে, সে সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা।”
জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে ড. আসিফ নজরুল বলেন, “যে যা বলুক, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে ভোটের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে রাজনৈতিক দলগুলোরও দায়িত্ব রয়েছে।”
এদিনের বৈঠকে জুলাই সনদ ছাড়াও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর মধ্যে রায়েরবাজার শহীদ কবরস্থানে অজ্ঞাত শহীদদের পরিচয় শনাক্তে আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় একটি ডিএনএ ল্যাব স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া ১৯৮৪ সালের বননীতি বাতিল করে নতুন বন সংরক্ষণ নীতি প্রণয়নের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, যেখানে অবৈধ বননিধন ও ইনভেসিভ প্রজাতির গাছ রোপণ নিষিদ্ধ থাকবে।
মানবদেহ সংযোজন আইন নিয়েও আলোচনা হয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, “অঙ্গ কেনাবেচা ও অপব্যবহার ঠেকাতে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হবে।”
ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদারও উপস্থিত ছিলেন।
পাঠকের মন্তব্য