যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটির সামরিক নেতৃত্বকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা পুনরায় শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, এই পদক্ষেপটি নেওয়া হয়েছে রাশিয়া ও চীনের মতো প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর সঙ্গে সমতার ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রকে এগিয়ে রাখার জন্য।
ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন,
“অন্য দেশগুলোর পরীক্ষামূলক কর্মসূচির কারণে আমি প্রতিরক্ষা দপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছি আমাদের পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষাও সমানভাবে শুরু করতে।”
তিনি আরও দাবি করেছেন,
“যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড়। রাশিয়া দ্বিতীয় স্থানে, আর চীন ‘অনেক পিছিয়ে’ তৃতীয় স্থানে।”
দীর্ঘ ৩৩ বছরের বিরতি শেষে পরীক্ষা পুনরায়
যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯২ সালের পর আর কোনো পারমাণবিক পরীক্ষা চালায়নি। তখন সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডব্লিউ. বুশ শীতল যুদ্ধের শেষের প্রেক্ষাপটে অস্ত্র পরীক্ষায় স্থগিতাদেশ জারি করেছিলেন।
তবে ট্রাম্প তার সাম্প্রতিক পোস্টে উল্লেখ করেছেন, তিনি তার প্রথম মেয়াদেই যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার হালনাগাদ ও আধুনিকায়ন করেছেন। তিনি স্বীকার করেছেন, এসব অস্ত্রের অপরিসীম ধ্বংসক্ষমতা রয়েছে, তবু কোনো বিকল্প না থাকায় এই পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে।
রাশিয়া ও চীনের পারমাণবিক কর্মসূচির প্রভাব
রাশিয়া সম্প্রতি পারমাণবিক শক্তিচালিত ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে। ট্রাম্প তার নিন্দা জানালেও, কয়েক দিনের মধ্যেই নিজ দেশে পরীক্ষা পুনরায় শুরু করার ঘোষণা দিয়েছেন।
চীনের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়েও তিনি সতর্ক করেছেন, লিখেছেন,
“চীন আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে সমকক্ষ হয়ে উঠতে পারে।”
পরীক্ষার প্রকল্প ও স্থান
যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ পারমাণবিক পরীক্ষা হয়েছিল ১৯৯২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর, ‘ডিভাইডার’ নামের প্রকল্পের আওতায়।
-
পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল নেভাডার ভূগর্ভস্থ টেস্ট সাইটে।
-
এটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ১,০৫৪তম পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা।
-
নেভাডা টেস্ট সাইটটি এখনও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অধীনে রয়েছে এবং প্রয়োজনে আবারও পরীক্ষা চালানো সম্ভব।
ট্রাম্প জানিয়েছেন, পরীক্ষা প্রক্রিয়া অবিলম্বে শুরু হবে। তবে বিস্তারিত কার্যক্রম এখনও প্রকাশ করা হয়নি।
বিশ্লেষক মন্তব্য
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক ও সামরিক সংকটের প্রতিফলন। যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক শান্তি প্রক্রিয়ায় নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।
পাঠকের মন্তব্য