রংপুর অঞ্চলের গরু খামারিরা খড়ের মূল্যবৃদ্ধিতে সমস্যায় পড়েছেন। মাত্র এক মাস আগেও যেখানে প্রতি কেজি খড় বিক্রি হতো ৭–৮ টাকায়, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০–১২ টাকায়।
নদী তীরবর্তী ও চর এলাকার কৃষকরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, কারণ সাম্প্রতিক বন্যায় প্রাকৃতিক ঘাস নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে তারা সম্পূর্ণভাবে খড় ও অন্যান্য পশুখাদ্যের ওপর নির্ভরশীল হচ্ছেন।
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার কৃষক মহুবর হোসেন বলেন, “আমার সাতটি গরু আছে। প্রায় ১০ হাজার কেজি খড় মজুত করেছিলাম, বন্যায় ৩ হাজার কেজি ভেসে গেছে। এখন খড়ের দাম বেড়ে যাওয়ায় খাবার জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।”
লালমনিরহাটের আবদার আলী জানান, “খড়ের সংকটের কারণে গত সপ্তাহে দুইটি গরু বিক্রি করতে হয়েছে। আগামী মাসে আমন ধান কাটার পর নতুন খড় পাওয়ার আশা।”
খড় ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রতি বছর এই সময় দাম কিছুটা বাড়ে, কিন্তু এবার বন্যার কারণে মূল্য আরও বেড়ে গেছে। লালমনিরহাটের নূর ইসলাম বলেন, “আমরা কৃষকদের কাছ থেকে ৮–১০ টাকায় কিনে ১০–১২ টাকায় বিক্রি করছি। ধান কাটা শুরু হলে দাম কমে ৫–৬ টাকায় নেমে আসবে।”
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলায় প্রায় ৩৫–৪০ লাখ টন খড় উৎপাদন হয়। পশুসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, এই এলাকায় প্রায় ৪২ লাখ গরু রয়েছে, যার মধ্যে ১৫–১৬ লাখ চরাঞ্চলের।
কুড়িগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, “খড় এখন কৃষকদের কাছে ধানের মতোই মূল্যবান। আমন ধান কাটার কাজ শুরু হলে দুই–তিন সপ্তাহের মধ্যে খড়ের দাম ধীরে ধীরে কমবে।”
পাঠকের মন্তব্য