বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের প্রস্তুতি বিষয়ে স্বাধীন মূল্যায়নে সহায়তা দেবে জাতিসংঘ। এ উদ্যোগটি আসছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের আনুষ্ঠানিক অনুরোধের প্রেক্ষিতে। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে বৈঠককালে জাতিসংঘের আন্ডার-সেক্রেটারি-জেনারেল এবং স্বল্পোন্নত দেশ, স্থলবেষ্টিত উন্নয়নশীল দেশ ও ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্র বিষয়ক হাই-রিপ্রেজেন্টেটিভ রাবাব ফাতিমা এ ঘোষণা দেন।
তিনি জানান, আগামী এক মাসের মধ্যেই এ মূল্যায়ন কার্যক্রম শুরু হবে এবং জানুয়ারির মধ্যভাগে শেষ হবে। আন্তর্জাতিক এক পরামর্শক এবং একজন বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞ যৌথভাবে এ মূল্যায়ন করবেন, যাতে ফলাফল হয় সমন্বিত ও ভারসাম্যপূর্ণ।
বহুপক্ষীয় অংশগ্রহণ
মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী সংগঠন, উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিত্বশীল ব্যক্তিবর্গ, দাতা সংস্থা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও রাজনৈতিক নেতাদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এতে নির্ধারণ করা হবে—বাংলাদেশ কতটা প্রস্তুত এলডিসি থেকে উত্তরণের পথে অগ্রসর হতে।
প্রধান উপদেষ্টার মন্তব্য
প্রধান উপদেষ্টা ইউনুস এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “উত্তরণের আগে বাস্তবভিত্তিক প্রমাণ থাকা জরুরি। এটি এখন একটি আবেগের বিষয়ে পরিণত হয়েছে, কিন্তু নীতিনির্ধারণে বস্তুনিষ্ঠ তথ্য অপরিহার্য।”
তিনি বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ইউনুস বলেন, এলডিসি সুবিধার কারণে এ খাত ব্যাপকভাবে লাভবান হয়েছে, তবে যথাযথ উত্তরণ পরিকল্পনা না থাকলে এই শিল্প বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়তে পারে।
জাতিসংঘের পর্যবেক্ষণ
রাবাব ফাতিমা জানান, জাতিসংঘের কাছে বাংলাদেশের সর্বশেষ অর্থনৈতিক তথ্য দুই বছরেরও বেশি পুরনো। “এরপর অনেক কিছুই পরিবর্তিত হয়েছে,” উল্লেখ করে তিনি দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক বাস্তবতা পুনর্মূল্যায়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
২০২২ সাল থেকে আন্ডার-সেক্রেটারি-জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ফাতিমা এসময় জাতিসংঘে কাজ করার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। বৈঠকে ইউনুস আগ্রহ প্রকাশ করেন, কীভাবে বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তারা জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থায় কর্মজীবনের সুযোগ পেতে পারেন এবং আন্তর্জাতিক সম্পৃক্ততা আরও জোরদার করতে পারেন।
বৈঠকে উপস্থিত ব্যক্তিরা
এ বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন—এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়াম এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত সালাহউদ্দিন নোমান চৌধুরী।
পাঠকের মন্তব্য