বাংলাদেশে প্রায় ১৫ লাখ পোল্ট্রি খামারি প্রতিদিন পশুচিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই অ্যান্টিবায়োটিক কিনছেন—যা মোট খামারির ৬৮ শতাংশের জন্য একটি উদ্বেগজনক বিষয়। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণায় উঠে এসেছে, এই পরিস্থিতি দেশের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
গবেষণাটি চারটি বিভাগের সাত জেলার ১০০টি খামারে পরিচালিত হয়েছিল, যেখানে ব্রয়লার, সোনালী ও লেয়ার মুরগির খাবার, পানি, ডিম এবং মাংস পরীক্ষা করা হয়। এতে দেখা গেছে, বাংলাদেশের পোল্ট্রি ভ্যালু চেইনে ভারী ধাতু ও অ্যান্টিবায়োটিক অবশিষ্টাংশের পরিমাণ বাড়ছে, যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৮৪ শতাংশ খামারি অ্যান্টিবায়োটিক সম্পর্কে জানলেও, ৮০ শতাংশই জানেন না যে পশুখাদ্যে এর ব্যবহারে আইন আছে। এছাড়া, ৬৫ শতাংশ খামারি পশুচিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনে আগ্রহী নন।
এদিকে, পোল্ট্রি খাদ্যে সিসা ও অন্যান্য বিষাক্ত ধাতুর উপস্থিতির ব্যাপারে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন। গবেষণায় উঠে এসেছে যে, শিশুদের রক্তে সিসার উপস্থিতি এবং বাজারে পাওয়া মাছেও সিসার চিহ্ন পাওয়া গেছে। এসব কারণে সরকারের নজরদারি বৃদ্ধি করা জরুরি, বিশেষ করে পোল্ট্রি ও মাছের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের (বিএফএসএ) চেয়ারম্যান, জাকারিয়া, জানান যে, ভারী ধাতুর উপস্থিতি একটি বড় উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেছেন, “বাংলাদেশে প্রায় ৩ কোটি ৫০ লাখ শিশু সিসা-দূষণে ইতোমধ্যেই আক্রান্ত হয়েছে—এটি একটি ভয়াবহ জনস্বাস্থ্য সতর্কবার্তা।”
এছাড়া, বাংলাদেশে ফল পাকানোর জন্য ইথিলিন স্প্রের ব্যবহারও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) জানায়, চেম্বারে ইথিলিন গ্যাস ব্যবহার করে ফল পাকানো নিরাপদ ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত।
পাঠকের মন্তব্য