রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে জাতীয় ঐক্যের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কার্যকর উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। তাঁরা নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবাসনকেই সমস্যার একমাত্র সমাধান হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
আজ মঙ্গলবার কক্সবাজারের হোটেল বে ওয়াচে আয়োজিত অংশীজন সংলাপে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা এসব মতামত দেন।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ বলেন, অতীতে বিএনপি সরকার কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় রোহিঙ্গাদের সফল প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করেছিল। কিন্তু ২০১৭ সালে সরকারের ব্যর্থতায় সংকট আরও জটিল আকার ধারণ করে। তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো সমাধান সম্ভব নয়।’ বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় এ সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি।
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরোয়ার রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানোকে মানবিক ও ইসলামী দায়িত্ব হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, নিপীড়িতদের ন্যায়বিচার ও পূর্ণ নাগরিকত্ব নিশ্চিত করতে হবে। দায়ীদের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের আওতায় আনার ওপরও তিনি জোর দেন। পাশাপাশি রোহিঙ্গা তরুণদের শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নের কর্মসূচি চালুর আহ্বান জানান।
এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, রোহিঙ্গারা জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এর সমাধান একমাত্র নিজ দেশে মর্যাদা ও নিরাপত্তাসহ তাদের ফেরত পাঠানো।
এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, প্রত্যাবাসনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি মানবিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মসূচি হাতে নেওয়া জরুরি।
গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের অধ্যাপক আশরাফ আলী আকনসহ আরও কয়েকটি দলের প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশ নেন।
সংলাপটি পরিচালনা করেন পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম। এতে রোহিঙ্গা বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
নেতারা সর্বসম্মতভাবে বলেন, রোহিঙ্গা সংকট কেবল বাংলাদেশের নয়; এটি একটি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সমস্যা। তাই বিশ্ব সম্প্রদায়ের সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া এই দীর্ঘস্থায়ী সংকটের সমাধান সম্ভব নয়।
পাঠকের মন্তব্য