![]()
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। রায় ঘোষণা করেন বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল।
রায়ে বলা হয়েছে, তিনটি পৃথক অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি আরও দুটি অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। এটি সংশ্লিষ্ট আন্দোলনের মানবতাবিরোধী মামলায় প্রথম রায়, যা ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য মুহূর্ত হিসেবে ধরা হচ্ছে।
আইনি প্রক্রিয়ার পরবর্তী ধাপ
যদিও রায় ঘোষণা করা হয়েছে, এটি চূড়ান্ত নয়। শেখ হাসিনার আইনজীবীরা বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি আপিল করতে পারবেন। আপিলের মাধ্যমে তারা রায়ের প্রমাণ, প্রক্রিয়া এবং আইনগত ত্রুটি নিয়ে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবেন।
আপিল বিভাগের শোনানির পরে রায় বহাল রাখা, পরিবর্তন বা বাতিল করা সম্ভব। এরপর আবার আসামিপক্ষ রিভিউ আবেদন করতে পারবেন, যেখানে নতুন প্রমাণ বা গুরুতর আইনি ভুল দেখানো সম্ভব। রিভিউ আবেদনের পর যে রায় হবে, তা হবে বিচারিক প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত ধাপ।
তবে সংবিধান অনুযায়ী, রিভিউ পরবর্তী চূড়ান্ত রায়ের পরও শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে পারবেন। সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি দণ্ড মওকুফ, কমানো বা স্থগিত করার ক্ষমতা রাখেন।
মানবিক ও সামাজিক প্রভাব
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকালে সংঘটিত ঘটনা দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে গভীর প্রভাব ফেলেছে। মামলার রায় বাংলাদেশের ইতিহাসে মানবতাবিরোধী অপরাধের আইনি ন্যায়বিচারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। একই সঙ্গে এটি রাজনৈতিক ও সামাজিক সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে দাঁড়িয়েছে, যেখানে শিক্ষিত নাগরিক, মানবাধিকার সংস্থা ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা রায়ের মানবিক ও আইনগত দিকগুলো মনোযোগসহ পর্যবেক্ষণ করছেন।
একাধিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষক মন্তব্য করেছেন, “এই রায় শুধু অপরাধীদের দণ্ডিত করার প্রক্রিয়া নয়, বরং সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং রাজনৈতিক দমন-নিরোধের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক।”
পাঠকের মন্তব্য