জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার অভিযোগ করেছেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) তাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করছে। তিনি বলেছেন, “আমরা ভিকটিম হয়েও আজ কাঠগড়ায় দাঁড়ানো মানুষ। আমাদের ন্যায্য দাবি পর্যন্ত শুনতে চায় না তারা।”
সম্প্রতি একটি টেলিভিশন টকশোতে অংশ নিয়ে সারোয়ার তুষার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,
“এমনি অভাগা আমরা যে, ভিকটিম হওয়ার পরও কাঠগড়ায়। শাপলা আমাদেরকে দিচ্ছে না— এটা জনগণের কাছে বিচার দিচ্ছি।”
তিনি জানান, শিক্ষকদের একটি সমাবেশে যোগ দিয়ে তিনি বলেছেন,
“আপনাদের দাবির প্রতি আমাদের সমর্থন আছে, কিন্তু আমাদেরও একটি বিচার আছে আপনাদের কাছে। ইলেকশন কমিশন আমাদের সঙ্গে যে আচরণ করছে, আপনারা যেন তা দেখেন।”
তুষার আরও বলেন, “আমরা তো ভিকটিম। ভিকটিম মানে সহানুভূতি পাওয়ার কথা, কিন্তু এখন সেটাও যদি অপরাধ হয়— তাহলে তো আমাদের অবস্থা অভাগার মতো। অভাগা যেদিকে চায়, সাগর শুকিয়ে যায়।”
ইসির আচরণ প্রসঙ্গে তিনি অভিযোগ করে বলেন,
“ইসি আমাদের চা খাওয়ার ফাঁকে ইনফরমালি বলেছে— ‘আমরা একটা পজিশন নিয়ে ফেলেছি, এখান থেকে সরে আসা যাবে না।’ তারা আমাদের আদালতে যেতে বলেছে। কিন্তু আদালতে তো বিষয়টি ইতিমধ্যে সেটেল্ড। তারা মনে করছে, আদালতের নাম নিয়ে আমাদের ব্লাফ দেওয়া যাবে।”
তিনি আরও যুক্ত করেন,
“জাতীয় প্রতীক বা কোনো প্রতিষ্ঠানের লোগো সংক্রান্ত ইস্যুতে আদালতের অবস্থান সবার জানা। ইসির এই পজিশনটা সাংবিধানিক নয়, এটা একটি রাজনৈতিক অবস্থান। অদৃশ্য কোনো জায়গা থেকে তারা নিয়ন্ত্রণ পাচ্ছে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সারোয়ার তুষারের এই বক্তব্য নির্বাচনী ব্যবস্থার ওপর জনগণের আস্থাহীনতার একটি প্রতিচ্ছবি। তিনি শুধু রাজনৈতিক অভিযোগ করেননি, বরং একটি মানবিক বাস্তবতা তুলে ধরেছেন— যেখানে একটি ছোট দল ন্যায়বিচারের জন্য লড়ছে, অথচ তাদের কথা শোনার মতো কেউ নেই।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সম্প্রতি নির্বাচনী আসন পুনর্বিন্যাস, প্রতীক বরাদ্দ এবং প্রার্থী যাচাইয়ে ইসির দ্বৈত নীতি নিয়ে একাধিকবার ক্ষোভ জানিয়েছে। দলটির দাবি, তারা সংবিধান ও জনগণের পক্ষে কথা বলছে, কিন্তু প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক বাধায় তাদের মতপ্রকাশের অধিকার সংকুচিত হচ্ছে।
তুষারের বক্তব্যের মূল বার্তা একটাই—
“আমরা চাই না কেউ আমাদের দয়া করুক, আমরা শুধু চাই বিচার হোক, ন্যায় হোক।”
এই বক্তব্য কেবল একটি রাজনৈতিক দল নয়, বরং বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক বাস্তবতার ভেতর লুকিয়ে থাকা মানবিক আর্তিরও প্রতিধ্বনি হয়ে উঠেছে।
পাঠকের মন্তব্য