বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থায় ফরেনসিক বিজ্ঞানের আধুনিক প্রয়োগ ও ন্যায়বিচার প্রক্রিয়া আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আজ বুধবার (৮ অক্টোবর ২০২৫) সিআইডি সদর দপ্তর, মালিবাগে অনুষ্ঠিত হলো একদিনব্যাপী বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি। এতে অংশ নেন ৬০ জন সহকারী জজ ও জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পদমর্যাদার কর্মকর্তা।
এই প্রশিক্ষণটি ছিল বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের ৫১তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের অংশ। প্রশিক্ষণার্থীরা ফরেনসিক তদন্ত বিষয়ে তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি সিআইডির বিভিন্ন আধুনিক ল্যাব পরিদর্শন করেন।
সিআইডি প্রধানের বক্তব্য: “বিচার ও পুলিশ একসঙ্গে কাজ করলে ন্যায়বিচার আরও মজবুত হয়”
প্রশিক্ষণ কর্মসূচির প্রধান অতিথি ছিলেন সিআইডি প্রধান ও অতিরিক্ত আইজিপি মো. ছিবগাত উল্লাহ, বিপিএম, পিপিএম। সভাপতিত্ব করেন ডিআইজি (ফরেনসিক) মো. জমশের আলী।
বক্তৃতায় সিআইডি প্রধান বলেন,
“পুলিশ ও বিচার বিভাগের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ন্যায়বিচারকে আরও শক্তিশালী করে। আধুনিক বিচার ব্যবস্থায় ফরেনসিক বিজ্ঞান অপরিহার্য একটি উপাদান। সিআইডি এখন ফরেনসিক সক্ষমতার নতুন যুগে প্রবেশ করেছে—আমরা আধুনিক প্রযুক্তিতে প্রমাণ সংগ্রহ ও বিশ্লেষণে আরও উন্নত হয়েছি।”
সভাপতির বক্তব্যে ডিআইজি (ফরেনসিক) মো. জমশের আলী বলেন,
“বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে প্রমাণ উপস্থাপন করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সিআইডি দীর্ঘদিন ধরে পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করছে। পুলিশ ও বিচার বিভাগের পারস্পরিক সমন্বয়ই সত্যিকারের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মূল চাবিকাঠি।”
ল্যাব পরিদর্শন ও ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ
দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী বিচারকরা ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব, কেমিক্যাল ল্যাব ও জেনারেল ফরেনসিক ল্যাব ঘুরে দেখেন এবং ফরেনসিক প্রমাণের সংরক্ষণ, বিশ্লেষণ ও উপস্থাপনার বিষয়ে হাতে–কলমে ধারণা নেন।
তাঁরা ডিজিটাল ফরেনসিক, সাইবার ক্রাইম ও ইলেকট্রনিক প্রমাণ নিয়ে প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন। সিআইডির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এসব প্রশ্নের বিস্তারিত উত্তর দেন, যা প্রশিক্ষণার্থীদের ফরেনসিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে গভীর বোঝাপড়া তৈরিতে সহায়তা করে।
উপস্থিতি ও আয়োজন
এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন
ডিআইজি (সিপিসি) মো. আবুল বাশার তালুকদার,
অতিরিক্ত ডিআইজি (অর্গানাইজড ক্রাইম) আলি আকবর খান
এবং সিআইডির অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
প্রশিক্ষণার্থী বিচারকদের নেতৃত্ব দেন বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) ও কোর্স পরিচালক, সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. ফারুক।
এই প্রশিক্ষণ শুধু ফরেনসিক জ্ঞানের পরিধি বাড়াবে না, বরং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বিচার বিভাগ ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মধ্যে কার্যকর সমন্বয় আরও দৃঢ় করবে—এমনটাই আশা করেন সংশ্লিষ্টরা।
পাঠকের মন্তব্য