খাগড়াছড়ির সদর ও গুইমারা উপজেলায় সাম্প্রতিক দাঙ্গা, ভাঙচুর এবং পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় অজ্ঞাতনামা প্রায় ৯০০ জনকে আসামি করে তিনটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এসব মামলায় হত্যাকাণ্ড, ভাঙচুর, দাঙ্গা সৃষ্টি এবং সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগ আনা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বাতেন মৃধা।
কী অভিযোগে মামলা?
পুলিশ জানায়, ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে দাঙ্গা ও ভাঙচুরের অভিযোগে সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহরিয়ার বাদী হয়ে ৬০০ থেকে ৭০০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
এছাড়া, গুইমারা থানায় হত্যাকাণ্ড এবং পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় দুটি পৃথক মামলা করা হয়েছে। এতে আরও ২৫০ থেকে ৩০০ জন অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
গুইমারা থানার ওসি এনামুল হক চৌধুরী জানান, বর্তমানে উপজেলায় পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
প্রেক্ষাপট: ধর্ষণ মামলা ও উত্তেজনা
এই সহিংসতার সূত্রপাত খাগড়াছড়ির স্কুলছাত্রী ধর্ষণ মামলাকে কেন্দ্র করে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত শয়ন শীলকে ৬ দিনের রিমান্ড শেষে বুধবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রথমদিকে ধর্ষণ ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয়ভাবে অনির্দিষ্টকালের সড়ক অবরোধ, দাঙ্গা ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পাহাড়ি ও বাঙালি সম্প্রদায়ের মধ্যে টানটান পরিস্থিতি বিরাজ করে।
পরিস্থিতি এখন কেমন?
খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি আব্দুল বাতেন মৃধা জানান, বর্তমানে খাগড়াছড়ির পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। ১৪৪ ধারা এখনও কার্যকর থাকলেও বাজার, দোকানপাট ও যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, হাটের দিনে পাহাড়ি ও বাঙালি উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ স্বাভাবিকভাবে বাজারে আসতে শুরু করেছে। খাগড়াছড়ির প্রধান সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচলও স্বাভাবিক রয়েছে।
মানবিক দিক
এই ঘটনার পর স্থানীয় মানুষদের মধ্যে ভয়ভীতি ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল। অনেকেই বাজারে আসতে কিংবা স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরতে দ্বিধায় ছিলেন। তবে এখন ধীরে ধীরে পরিস্থিতি শান্ত হচ্ছে। স্থানীয় প্রবীণরা মনে করেন, সংলাপ ও পারস্পরিক আস্থা গড়ে তুলতে পারলেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।
পাঠকের মন্তব্য