মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার এক নির্বাহী আদেশে ঘোষণা দিয়েছেন—বামপন্থী আন্দোলন অ্যান্টিফা এখন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে “দেশীয় সন্ত্রাসী সংগঠন” হিসেবে বিবেচিত হবে। হোয়াইট হাউসের বরাত দিয়ে এএফপি জানিয়েছে, সাম্প্রতিক ডানপন্থী কর্মী চার্লি কার্ক হত্যাকাণ্ডের পর এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলো।
অ্যান্টিফা কী?
‘অ্যান্টিফা’ বা অ্যান্টি-ফ্যাসিস্ট হলো ছড়িয়ে থাকা এক শিথিল বামপন্থী নেটওয়ার্ক, যারা ফ্যাসিবাদ, বর্ণবাদ এবং কর্তৃত্ববাদী রাজনীতির বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে আন্দোলন করে। কোনো কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বা কাঠামো না থাকলেও সংগঠনটি মার্কিন রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্কিত।
ট্রাম্পের অভিযোগ
নির্দেশনায় ট্রাম্প অ্যান্টিফাকে “জঙ্গিবাদী ও নৈরাজ্যবাদী উদ্যোগ” হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তাঁর দাবি, এই গোষ্ঠী সরকারের পতন ঘটাতে সহিংসতা উসকে দিচ্ছে এবং বাকস্বাধীনতাকে দমনের হাতিয়ার হিসেবে সন্ত্রাসকে ব্যবহার করছে।
আদেশে বলা হয়েছে—আইনের শাসন বাধাগ্রস্ত করা, আইনসম্মত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড দমন এবং সহিংস কর্মকাণ্ড চালানোর কারণে অ্যান্টিফাকে দেশীয় সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করা হলো।
আইনি পরিণতি
এ ঘোষণার পর অ্যান্টিফার সদস্য ও তাদের সমর্থকদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। এতে দেশজুড়ে রাজনৈতিক ভিন্নমত প্রকাশের ক্ষেত্রে নতুন এক ধরণের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। নাগরিক অধিকারকর্মীরা মনে করছেন, এ সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রে অধিকার ও স্বাধীনতার সীমারেখা আরও সংকুচিত করতে পারে।
হত্যাকাণ্ড ও তার প্রেক্ষাপট
ঘটনার সূত্রপাত ১০ সেপ্টেম্বর। ইউটাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ডানপন্থী কর্মী চার্লি কার্ক নিহত হন। এ ঘটনায় ২২ বছর বয়সী টাইলার রবিনসনকে অভিযুক্ত করেছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ। এর পর থেকেই ট্রাম্প বামপন্থী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। অ্যান্টিফাকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা ছিল তারই ধারাবাহিকতা।
মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি
ট্রাম্পের এই ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রে গভীর রাজনৈতিক বিভাজনের প্রতিফলন। একদিকে ডানপন্থীরা মনে করছে, এই পদক্ষেপে সহিংসতা দমন হবে। অন্যদিকে সমালোচকরা বলছেন, এটি রাজনৈতিক মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর হুমকি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নাগরিক সমাজে মতবিরোধ থাকলেও গণতান্ত্রিক কাঠামো রক্ষার জন্য সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন অপরিহার্য। সহিংসতার প্রতিক্রিয়ায় সহিংস নীতি গ্রহণ মানবিক মূল্যবোধকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
পাঠকের মন্তব্য