প্রযুক্তিনির্ভর প্রতারণার নতুন কৌশলে এবার শিকার হয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সহ–উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন ও আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. জাফর উল্লাহ তালুকদার। তাঁদের হোয়াটসঅ্যাপ আইডি হ্যাক করে প্রতারকরা বন্ধু, সহকর্মী ও আত্মীয়দের কাছে টাকা দাবি করছে।
বুধবার দুপুরে অধ্যাপক কামাল উদ্দিনের হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাকড হয়। এর পরপরই তাঁর নাম ব্যবহার করে বিভিন্নজনের কাছে টাকা চাইতে শুরু করে প্রতারকরা। বিষয়টি বুঝতে পেরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি নিজেই ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে সবাইকে সতর্ক করেন। একই সঙ্গে হাটহাজারী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন,
“আসসালামু আলাইকুম, কিছুক্ষণ পূর্বে আমার হোয়াটসঅ্যাপ ও বিকাশ নাম্বার প্রতারক হ্যাক করেছে। দয়া করে প্রতারিত হবেন না।”
অধ্যাপক কামাল উদ্দিন জানান, কুমিল্লার কোতোয়ালি থানার ওসি পরিচয়ে একজন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে হোয়াটসঅ্যাপে একটি লিংক পাঠানো হয়। অসতর্কতাবশত তিনি লিংকে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ আইডি হ্যাক হয়ে যায়।
একই দিন আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক জাফর উল্লাহ তালুকদারের হোয়াটসঅ্যাপও হ্যাকড হয়। তিনি বলেন, “গতকাল কিছু অপরিচিত ব্যক্তি ফোনে টাকা চাইছিল। আজ আবার হোয়াটসঅ্যাপে লিংক পাঠানো হয়। আমি লিংকে প্রবেশ করলে আইডি হ্যাক হয়ে যায়। এরপর থেকে আমার নম্বর ব্যবহার করে বিভিন্নজনের কাছে টাকা চাওয়া হচ্ছে।”
আগেও হয়েছিল হ্যাকিংয়ের ঘটনা
এর আগে চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এবং তৎকালীন সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. আলাউদ্দিন মজুমদার একই কৌশলে প্রতারণার শিকার হয়েছিলেন। তখন তাঁদের করোনার চতুর্থ ডোজের টিকা দেওয়ার নামে লিংকে প্রবেশ করিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাক করা হয়।
পুলিশের বক্তব্য
হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুর কাদের ভূঁইয়া বলেন,
“সহ–উপাচার্য জিডি করেছেন। পুলিশ পরিচয়ে প্রতারণা এখন নতুন কৌশল। আমরা প্রযুক্তির সহায়তায় হ্যাকারদের শনাক্তের চেষ্টা করছি।”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপরিচিত কারও পাঠানো লিংকে প্রবেশ না করা, দুই–ধাপ যাচাইকরণ (টু–ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন) চালু রাখা এবং সন্দেহজনক কল বা মেসেজ উপেক্ষা করাই এমন প্রতারণা ঠেকানোর প্রধান উপায়।
পাঠকের মন্তব্য