ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা হারে শেষ হলো দক্ষিণ আমেরিকা বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দীর্ঘ পথচলা
দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব শেষ হলো একটি আকস্মিক এবং হতাশাজনক পরিস্থিতিতে। গত রাতে ইকুয়েডরের মাঠে আর্জেন্টিনা ১-০ গোলে হেরে গেছে, আর ব্রাজিলও লা পাজে একই ব্যবধানে বলিভিয়ার কাছে পরাজিত হয়েছে। এই ধরণের হারে ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে অবস্থানে পৌঁছেছে সেলেসাওরা, এবং পঞ্চম স্থানে থেকে বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করছে।
অবশ্য বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা ইতোমধ্যে ২০২৬ সালের বিশ্বকাপে খেলার জন্য যোগ্যতা অর্জন করেছে, সেই সঙ্গে ব্রাজিলও তাদের সাথে একই কাজ করেছে।
ইকুয়েডরের রাজধানী কুইটো শহরের এল আলতো স্টেডিয়াম সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪,১৫০ মিটার উচ্চতায় অবস্থান করছে। এই উচ্চতা জয় করতে ব্রাজিলের খেলোয়াড়দের জন্য এটি বেশ কষ্টসাধ্য ছিল। বলিভিয়ার বিরুদ্ধে ব্রাজিল শুরুর দিকে কিছুটা অসন্তোষ প্রকাশ করলেও শেষ পর্যন্ত তাদের দখলে ছিল না বলের অধিকাংশ। ব্রাজিল ২৩টি শট নিয়েছিল, যেখানে বলিভিয়া লক্ষ্যভেদ করেছে ১০টি শটে।
স্বাগতিকদের পক্ষে জয়সূচক একমাত্র গোলটি পেনাল্টি থেকে আসে। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে গেমটি উল্টো দিকে মোড় নেয় যখন মিগুয়েল তেরসেরোস পেনাল্টি থেকে গোল করেন। এটি ২০১৯ সালের পর ঘরের মাঠে ব্রাজিলের বিরুদ্ধে বলিভিয়ার প্রথম জয়। ব্রাজিলের কোচ কার্লো আনচেলোত্তি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য World Cup। আমি বিশ্বাস করি, আমরা সেখানে ভালো করব।”
অন্যদিকে, কুইটোতে আর্জেন্টিনার শেষ ম্যাচে লিওনেল মেসি খেলেননি। কোচ লিওনেল স্কালোনি পাঁচটি পরিবর্তনের সঙ্গে নতুন একটি দল গঠন করেছিলেন। মেসিহীন আর্জেন্টিনার এই দলটি লক্ষ্য করার মতো একটি শটও নিতে পারেনি। অধিনায়ক নিকোলাস ওটামেন্দি লাল কার্ড দেখার পর ইকুয়েডর প্রথম গোলটি করে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই মইস কেইসেদো লাল কার্ড দেখে দলটি ১০ জনে পরিণত হয়েছে।
যদিও মেসি খেলতে আসতে পারেনি, কিন্তু তার অতৃপ্তি ঘুচেছে। লাতিন অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে এক আসরে আট গোল নিয়ে প্রথমবারের মতো সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন তিনি।
এই মহাদেশ থেকে ২০২৬ সালের বিশ্বকাপে খেলার জন্য যোগ্যতা অর্জন করেছে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, ইকুয়েডর, কলম্বিয়া, উরুগুয়ে এবং প্যারাগুয়ে। ব্রাজিলকে হারিয়ে বলিভিয়া তাদের স্বপ্নটা বাঁচিয়ে রেখেছে। বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পেতে তারা আন্ত-মহাদেশীয় প্লে অফে খেলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এই অকল্পনীয় হারের পর বিশ্ব ফুটবলে নতুন পরিবর্তনের সম্ভাবনা বেড়ে গেল। আগামীর বিশ্বকাপে কী ঘটবে, সেটাই এখন সকলের অপেক্ষার বিষয়।
পাঠকের মন্তব্য