বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য তহবিল বাড়ানো এবং তাদের মিয়ানমারের রাখাইনে প্রত্যাবাসনের আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা জোরদার করতে কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এক উচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলন।
আগামী ২৫ আগস্ট কক্সবাজারের উখিয়ার ইনানী এলাকায় হোটেল বে-ওয়াচে শুরু হবে তিন দিনের এ আয়োজন। “অংশীজন সংলাপ: রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে আলোচনার জন্য প্রাপ্ত বার্তা” শীর্ষক এ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেবেন।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইমরান হোসাইন সজীব জানিয়েছেন, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা আগমনের আট বছর পূর্তির দিনে এ সম্মেলন শুরু হবে। এতে কয়েকটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, জাতিসংঘ সংস্থার প্রতিনিধি, রোহিঙ্গা বিষয়ক আন্তর্জাতিক দূত এবং বিদেশে বাংলাদেশের মিশনের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন।
সূত্র জানায়, ২৪ থেকে ২৬ আগস্ট পর্যন্ত আয়োজিত এ সম্মেলনে পাঁচটি কর্ম অধিবেশনের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও শরণার্থী শিবির প্রদর্শনী থাকবে। আলোচনায় মূল গুরুত্ব পাবে রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা ও রাখাইনে প্রত্যাবাসন ইস্যু। ২৬ আগস্ট অতিথিরা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করবেন।
অন্তর্বর্তী সরকার আশা করছে, এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে নতুন করে সম্পৃক্ত করা যাবে। বিশেষ করে আসিয়ান ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর কাছ থেকে রাজনৈতিক ও আর্থিক সহায়তা নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও রোহিঙ্গা বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমান জানিয়েছেন, কক্সবাজারের সম্মেলন জাতিসংঘের উদ্যোগে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিতব্য একটি বৃহত্তর বৈঠকের প্রস্তুতির অংশ। বিশ্বের ১০৬টি দেশ ইতিমধ্যেই এ উদ্যোগকে সমর্থন দিয়েছে।
এরপর ডিসেম্বর মাসে কাতারের রাজধানী দোহায় আরেকটি উচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলনের প্রস্তুতি চলছে। কক্সবাজার ও নিউইয়র্কের আলোচনার ভিত্তিতেই দোহা সম্মেলনে রোহিঙ্গা ইস্যুর দীর্ঘমেয়াদি সমাধান খুঁজে বের করার প্রচেষ্টা জোরদার হবে।
বাংলাদেশে বর্তমানে ১৪ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত অবস্থায় রয়েছে। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমন-পীড়ন থেকে প্রাণ বাঁচাতে লাখো রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।
পাঠকের মন্তব্য