যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ আপাতত থামছে আরও ৯০ দিনের জন্য। পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপসহ কড়া বাণিজ্যনীতি কার্যকরের তারিখ পিছিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে উভয় দেশ।
সোমবার (১১ আগস্ট) স্থানীয় সময় ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, তিনি নির্বাহী আদেশে সই করে যুদ্ধবিরতির সময়সীমা বাড়িয়েছেন। একই সিদ্ধান্তের কথা জানায় বেইজিংও।
এতে চীনা পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত ৩০ শতাংশ শুল্ক বহাল থাকছে, তবে নতুন করে বাড়তি শুল্কারোপ আপাতত হচ্ছে না। পূর্বনির্ধারিত সময়সীমা ছিল মঙ্গলবার (১২ আগস্ট), তার আগেই এ সিদ্ধান্ত এল।
এই বিরতির ফলে দুই দেশ তাদের মধ্যে থাকা বাণিজ্যিক মতপার্থক্য নিয়ে আলোচনা করার বাড়তি সময় পেল। বিশ্লেষকদের মতে, এর মাধ্যমে বছরের শেষ দিকে ট্রাম্প ও শি জিনপিংয়ের মধ্যে সম্ভাব্য শীর্ষ বৈঠকের পথও খুলে যেতে পারে।
চীন-যুক্তরাষ্ট্র ব্যবসায় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট শন স্টেইন বলেন, সময়সীমা বাড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এতে একটি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করার সুযোগ তৈরি হবে, যা ব্যবসায়ীদের বাজারে প্রবেশাধিকার ও পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা দেবে।
ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফেরার পরই দুই দেশের মধ্যে শুল্ক যুদ্ধ শুরু হয়। মে মাসে চীনা পণ্যে ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত এবং যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে চীন ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করে। পরে আন্তর্জাতিক চাপ ও আলোচনার পর শুল্কহার ধাপে ধাপে কমিয়ে আনা হয়—যুক্তরাষ্ট্র ৩০ শতাংশে, চীন ১০ শতাংশে।
জুন মাসে উত্তেজনা প্রশমনে একটি প্রাথমিক চুক্তিতে পৌঁছে উভয় দেশ। ওয়াশিংটন কম্পিউটার চিপ ও পেট্রোকেমিক্যাল উৎপাদনে ব্যবহৃত ইথেনের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে, আর বেইজিং বিরল খনিজের প্রবাহ সহজ করতে সম্মত হয়।
তবে বড় কোনো স্থায়ী সমঝোতা হবে কি না, তা অনিশ্চিত। সাবেক মার্কিন বাণিজ্য কর্মকর্তা জেফ মুনের মতে, সীমিত চুক্তি হতে পারে—যেমন চীন বেশি আমেরিকান সয়াবিন কিনবে বা নির্দিষ্ট পণ্যের প্রবাহ বজায় রাখবে—কিন্তু গভীর মতপার্থক্য বহাল থাকবে, এবং বাণিজ্যযুদ্ধ বহু বছর ধরে ধীরে ধীরে চলতে পারে।
পাঠকের মন্তব্য