নিজস্ব প্রতিবেদক
‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক গুরুত্বপূর্ণ ভাষণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে, রমজান শুরু হওয়ার আগেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাতে জাতির উদ্দেশে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে তিনি বলেন,
“অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আমি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে চিঠি পাঠাব, যেন নির্বাচন কমিশন আগামী রমজানের আগে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করে।”
তিনি বলেন, নির্বাচন হবে এই অন্তর্বর্তী সরকারের সর্বশেষ ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। সেইসঙ্গে একটি নির্বাচিত সরকারের কাছে শান্তিপূর্ণভাবে দায়িত্ব হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হবে।
“আজ এই মহান দিবসে বক্তব্য রাখার পর থেকেই আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করব,” বলেন অধ্যাপক ইউনূস।
নির্বাচন হবে উৎসবমুখর
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবারের নির্বাচন যেন স্মরণীয় একটি অধ্যায় হয়ে থাকে—শান্তিপূর্ণ, উৎসবমুখর, এবং সর্বোচ্চ ভোটার অংশগ্রহণের মাধ্যমে।
“আমরা চাই, এবারের নির্বাচন হোক আনন্দ-উৎসবের দিক থেকে, শান্তি ও সৌহার্দ্যের দিক থেকে, ভোটার উপস্থিতির দিক থেকে দেশের ইতিহাসে স্মরণীয়।”
প্রবাসী ভোটারদের জন্য ব্যবস্থা
ভাষণে প্রবাসী ভোটারদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন,
“আমরা প্রবাসী ভাইবোনদের ভোট দেওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করতে চাই। রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের ঐতিহাসিক অবদান দেশের পুনরুদ্ধারে বড় ভূমিকা রেখেছে। তাই তাদের অংশগ্রহণ অপরিহার্য।”
নারী ও নতুন ভোটারদের গুরুত্ব
নারী ভোটারদের নির্বিঘ্ন অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতেও পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
“নারীরা যেন উৎসাহ নিয়ে ভোট দিতে পারে, আমরা সে লক্ষ্যে কেন্দ্রে কেন্দ্রে নারীবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করব।”
ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত নতুন প্রজন্মের ভোটারদের উৎসাহ দিয়ে তিনি বলেন,
“এই নির্বাচন হবে তাদের জন্য বকেয়া আনন্দ ফিরে পাওয়ার উৎসব। যারা জীবনে একবারও ভোট দিতে পারেনি, এবার তারা উৎসবে যোগ দেবে।”
নির্বাচনের দিন হবে জাতীয় উৎসব
ভোটের দিনটি যেন ঈদের মতো আনন্দের দিন হয়ে ওঠে, সে প্রত্যাশাও ব্যক্ত করেন অধ্যাপক ইউনূস:
“আপনারা বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে ভোটকেন্দ্রে যাবেন। নাগরিক অধিকার প্রয়োগের মহা আনন্দ পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার সুযোগ এটি। এখন থেকেই প্রস্তুতি নিন, আপনার এলাকায় কেমন ভোটব্যবস্থা হলে আনন্দমুখর হয় তা নিয়ে কথা বলুন।”
তিনি আরও বলেন, এবারের নির্বাচন নতুন বাংলাদেশ গড়ার ভিত্তি রচনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
“এই নির্বাচন আমাদের ভবিষ্যৎ দিক নির্ধারণ করবে। আমরা একটি গণতান্ত্রিক, মানবিক ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গঠনের পথে অগ্রসর হব।”
পাঠকের মন্তব্য