দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দেশের তিনটি জেলায় স্বাস্থ্য, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও খাদ্য খাতে অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে। মঙ্গলবার পরিচালিত অভিযানে বিভিন্ন অভিযোগের সত্যতা যাচাই করা হয়েছে।
দুদকের এনফোর্সমেন্ট ইউনিট জানিয়েছে, রাজধানী, সাতক্ষীরা ও যশোরে অভিযানকালে দালালচক্র, অননুমোদিত প্রতিষ্ঠান, নথিপত্রে গরমিল ও নিম্নমানের পণ্য মজুদের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রাজধানী: রাজউক ও প্লট বরাদ্দে অনিয়ম
রাজধানীতে, রাজউক-এর অসাধু কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে দুদক প্রধান কার্যালয়ের একটি টিম অভিযান পরিচালনা করে।
টিমটি প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত আবেদনপত্র, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, এমআইএস তথ্যসহ বিভিন্ন নথি সংগ্রহ করে এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বক্তব্য গ্রহণ করে। প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।
সাতক্ষীরা: স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অনিয়ম
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগীদের প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠানোর অভিযোগেও দুদক অভিযান পরিচালনা করে। সমন্বিত জেলা কার্যালয় ও খুলনার টিমের তত্ত্বাবধানে সাতজন দালালকে হাতেনাতে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেন।
পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, অধিকাংশ ডায়াগনস্টিক সেন্টার লাইসেন্স ছাড়া পরিচালিত হচ্ছে এবং দালালদের মাধ্যমে রোগী সংগ্রহ করছে। কিছু প্রতিষ্ঠান মালিক অভিযান টের পেয়ে কার্যক্রম বন্ধ করে পালিয়ে যান। রোগী ও সেবাগ্রহীতাদের সাক্ষাৎ, নথি বিশ্লেষণ ও সরেজমিন পর্যবেক্ষণে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।
যশোর: খাদ্য গুদামে অনিয়ম
যশোরের শার্শা উপজেলার নাভারণ সরকারি খাদ্য গুদামে নিম্নমানের চাল মজুদের অভিযোগেও দুদক অভিযান চালায়। চালের প্রকৃত পরিমাণ যাচাইয়ের সময় ১০টি বস্তায় নিম্নমানের চালের প্রমাণ পাওয়া যায়। এছাড়া গুদাম কর্মকর্তা কৃষকদের কাছ থেকে সংগৃহীত ধানের তালিকা দেখাতেও ব্যর্থ হন। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।
পরবর্তী পদক্ষেপ
দুদক জানিয়েছে, অভিযানে সংগৃহীত তথ্য, উপাত্ত ও প্রমাণের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে কমিশনের কাছে বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। কমিশন আশা করছে, দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
পাঠকের মন্তব্য