বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন যাত্রাবাড়ীতে যুবদল কর্মী আবদুল কাইয়ুম আহাদ হত্যার মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের জামিন ও মামলা বাতিল আবেদনের শুনানিতে উত্তেজনা ও হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার দুপুরে বিচারপতি শেখ জাকির হোসেন ও বিচারপতি কে এম রাশেদুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানিকালে রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে তীব্র বাকবিতণ্ডা ও ধাক্কাধাক্কি হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা অভিযোগ করেন—খায়রুল হক বিচার বিভাগকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন, আর আসামিপক্ষ দাবি করে, তিনি অন্যায় আচরণের শিকার হচ্ছেন। আদালত অবশেষে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন মঞ্জুর করে আগামী রোববার মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করে।
শুনানিতে উপস্থিত প্রবীণ আইনজীবীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তারা ৭৫ বছরের বেশি বয়সে ন্যায়বিচারের জন্য দাঁড়িয়েছেন, অথচ বারবার শুনানি পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। রাষ্ট্রপক্ষ পাল্টা মন্তব্য করে খায়রুল হকের অতীত ভূমিকা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করে।
এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে আদালত কক্ষের ভেতরে মানবিক শৃঙ্খলার অভাব লক্ষ্য করা যায়—যেখানে ন্যায়বিচারের পরিবেশের বদলে রাজনৈতিক বিরোধ ও ব্যক্তিগত ক্ষোভের প্রতিফলন ঘটে।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ জুলাই ধানমন্ডির বাসা থেকে গ্রেফতারের পর খায়রুল হক কারাগারে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা চলমান, যেগুলোতে অভিযোগ রয়েছে, তিনি বিচার বিভাগে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করেছেন এবং সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় বড় পরিবর্তন এনে দেশের গণতন্ত্রে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছেন।
এ ঘটনার পর আইনি মহল ও সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে—আমরা কি ন্যায়বিচারের জন্য একটি শালীন ও মানবিক পরিবেশ তৈরি করতে পারছি? নাকি আদালত কক্ষও এখন রাজনৈতিক সংঘাতের মঞ্চে পরিণত হচ্ছে?
পাঠকের মন্তব্য