![]()
২০২৬ সালের ফুটবল বিশ্বকাপকে সামনে রেখে নতুন জার্সি উন্মোচন করেছে বিশ্বখ্যাত ক্রীড়া সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান অ্যাডিডাস (Adidas)। এ তালিকায় রয়েছে ২২টি দেশের জাতীয় দল, যাদের মধ্যে রয়েছে গত বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টিনা।
আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টস (TyC Sports) জানিয়েছে, এই নতুন জার্সির নকশায় প্রতিফলিত হয়েছে দেশের ফুটবল ইতিহাস, অর্জন ও উদ্ভাবনের ঐক্য। জার্সিটিতে ঐতিহ্যবাহী আকাশি নীল-সাদা ডোরা, সোনালি প্যাচ, এবং গলার পেছনে খোদাই করা ‘১৮৯৩’ সাল—যে বছর আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (AFA) প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
এই নতুন জার্সির বুকের মাঝে সোনালি প্যাচ যুক্ত করা হয়েছে, যা ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার গৌরবময় জয়কে স্মরণ করিয়ে দেয়। আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের নতুন জার্সিতে তিনটি সোনালি তারা শোভা পাচ্ছে—যা দেশের তিনটি বিশ্বকাপ জয়ের প্রতীক (১৯৭৮, ১৯৮৬, ২০২২)।
মেসির নেতৃত্বে নতুন রূপে আর্জেন্টিনা
এই নতুন জার্সি উন্মোচনে প্রধান মডেল হিসেবে ছিলেন দলের তারকা খেলোয়াড় লিওনেল মেসি। অ্যাডিডাসের ওয়েবসাইটে ও নির্দিষ্ট কিছু স্টোরে ইতোমধ্যে পাওয়া যাচ্ছে এই জার্সি।
মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০ থেকে ১৮০ মার্কিন ডলার (প্রায় ১২ হাজার থেকে ২২ হাজার টাকা) পর্যন্ত।
খেলোয়াড় সংস্করণের জার্সিতে রয়েছে Climacool+ প্রযুক্তি, যা ঘাম শোষণ ও শরীরের ভেতরে বাতাস চলাচল আরও উন্নত করে।
আর্জেন্টিনা দল এই নতুন জার্সি পরে ১৪ নভেম্বর অ্যাঙ্গোলার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে মাঠে নামবে। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায়।
অ্যাডিডাসের ২২ দেশের নতুন অধ্যায়
অ্যাডিডাস এবার শুধু আর্জেন্টিনা নয়, আরও ২১টি দেশের জার্সিও উন্মোচন করেছে। এসব দেশ হলো—
আলজেরিয়া, বেলজিয়াম, চিলি, কলম্বিয়া, কোস্টারিকা, জার্মানি, হাঙ্গেরি, ইতালি, জাপান, মেক্সিকো, উত্তর আয়ারল্যান্ড, পেরু, কাতার, সৌদি আরব, স্কটল্যান্ড, স্পেন, সুইডেন, ইউক্রেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভেনেজুয়েলা ও ওয়েলস।
অ্যাডিডাস জানিয়েছে, “প্রতিটি দেশের জার্সিতে তাদের জাতীয় পতাকার রং, ফুটবল ঐতিহ্য এবং ভৌগোলিক অনুপ্রেরণার প্রতিফলন ঘটানো হয়েছে।”
তবে এক ঐতিহাসিক পরিবর্তনের দিকেও নজর পড়ছে—
জার্মানির জন্য এটি হবে অ্যাডিডাসের শেষ জার্সি। দীর্ঘ ৭০ বছরের সম্পর্কের সমাপ্তি ঘটিয়ে ২০২৭ সাল থেকে নাইকির সঙ্গে জুটি বাঁধবে জার্মান ফুটবল দল।
অ্যাডিডাসের বার্তা: ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিকতার মেলবন্ধন
অ্যাডিডাস ফুটবলের নকশা বিভাগের সহসভাপতি টমাস মাস বলেন,
“২০২৬ বিশ্বকাপের জার্সি তৈরির প্রক্রিয়াটি ছিল প্রতিটি দেশের নিজস্ব পরিচয়কে সম্মান জানানোর পাশাপাশি উদ্ভাবনের সীমা আরও প্রসারিত করার এক প্রয়াস।”
অ্যাডিডাসের মতে, “ফুটবলের সৌন্দর্য হলো বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য। প্রতিটি দেশের জার্সি একেকটি গল্প, একেকটি সংস্কৃতি, একেকটি সংগ্রাম।”
শেষ কথা
আর্জেন্টিনার নতুন জার্সি কেবল একটি পোশাক নয়, এটি একটি ঐতিহ্যের প্রতীক, আবেগের বাহক। মেসিদের এই নীল-সাদা জার্সিতে যেমন ইতিহাসের ছোঁয়া, তেমনি ভবিষ্যতের প্রত্যয়ও স্পষ্ট।
২০২৬ বিশ্বকাপে আবারও সেই জার্সি উড়িয়ে দেবে আর্জেন্টিনার গর্বের পতাকা—
আর ফুটবলপ্রেমীরা অপেক্ষায় থাকবেন, মেসির শেষ বিশ্বকাপ নাকি নতুন প্রজন্মের প্রথম মহাকাব্য?
পাঠকের মন্তব্য