
মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল আদায়ের চুক্তিতে অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে সরকারের প্রায় ৩০৯ কোটি টাকার ক্ষতি সাধনের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ রোববার দুদকের জনসংযোগ বিভাগের উপপরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, কমিশন আজ মামলাটির অনুমোদন দিয়েছে।
দুদকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেমস লিমিটেড (সিএনএস)-কে একক উৎসভিত্তিক দরপত্রের মাধ্যমে মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল আদায়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পূর্বের বৈধ টেন্ডার বাতিল করে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রতিযোগিতা ছাড়াই এই চুক্তি সম্পাদন করা হয়।
সিএনএস লিমিটেডকে টাকার নির্দিষ্ট অংকে নয়, বরং মোট টোল আদায়ের ১৭.৭৫ শতাংশ সার্ভিস চার্জে (ভ্যাট ও আইটি বাদে) দায়িত্ব দেওয়া হয়। এতে প্রতিষ্ঠানটি ৪৮৯ কোটি টাকার বেশি বিল গ্রহণ করে, যেখানে ২০১০–২০১৫ মেয়াদে একই সেতুতে এমবিইএল-এটিটি যৌথভাবে মাত্র ১৫ কোটি টাকার কিছু বেশি ব্যয়ে টোল আদায় করেছিল।
এ ছাড়া ২০২২–২০২৫ মেয়াদে ইউডিসি কনস্ট্রাকশন লিমিটেড একই প্রযুক্তিতে তিন বছরের জন্য ৬৭ কোটি টাকায় চুক্তি পায়, যা পাঁচ বছরের হিসেবে প্রায় ১১২ কোটি টাকা হয়। ফলে সিএনএস লিমিটেডকে একক উৎসে চুক্তি দেওয়ার ফলে সরকারের ৩০৯ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে দুদকের অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন—
শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ওবায়দুল কাদের, আনিসুল হক, প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, সচিব এম এ এন ছিদ্দিক, অতিরিক্ত সচিব ফারুক জলিল, উপসচিব শফিকুল করিম, প্রকৌশলী ফিরোজ ইকবাল, ইবনে আলম হাসান, আফতাব হোসেন খান, আব্দুস সালাম, এবং সিএনএস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুনীর উজ জামান চৌধুরী, পরিচালক সেলিনা চৌধুরী ও ইকরাম ইকবাল।
দুদক জানিয়েছে, তারা পরস্পর যোগসাজশে সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজেদের বা অন্যকে অবৈধভাবে লাভবান করেছেন, যা দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
পাঠকের মন্তব্য