জনবল নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের দায়ের করা মামলায় সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলেও বিচারক তাঁদের জামিন নামঞ্জুর করেন।
কারাগারে যাওয়া কর্মকর্তারা
কারাগারে পাঠানো কর্মকর্তারা হলেন—
-
সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. বিলাল আহমদ চৌধুরী
-
সেকশন অফিসার বেলাল উদ্দিন
-
প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ
-
কর্মকর্তা মো. রেদোয়ান
-
কর্মকর্তা আব্দুল মজিদ
-
কর্মকর্তা তানভীর আহমদ
তাঁরা সবাই দুদকের চার্জশিটভুক্ত আসামি।
দুদকের বক্তব্য
দুদকের আইনজীবী লুৎফুল কিবরিয়া শামীম জানান, আসামিরা আদালতে আত্মসমর্পণ করলে সিলেট মহানগর দায়রা জজ রোকনুজ্জামান তাঁদের জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলার পটভূমি
২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ২০২৩ সালে তদন্ত শুরু করে এবং তৎকালীন উপাচার্য মোর্শেদ আহমেদ চৌধুরী ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার নঈমুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির প্রমাণ পায়।
এরপর ২০২৪ সালের ১ এপ্রিল দুদকের সিলেট সমন্বিত জেলা কার্যালয় নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে মামলা দায়ের করে। মামলায় তৎকালীন উপাচার্য, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারসহ মোট ৫৮ জন কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও চার্জশিট
২০২৪ সালের ২০ এপ্রিল দুদক আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। পরে ২৪ এপ্রিল সাবেক উপাচার্য, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। মঙ্গলবার আত্মসমর্পণ করা ছয় কর্মকর্তা সেই তালিকারই অংশ।
মানবিক প্রভাব
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সাধারণ মানুষ মনে করছেন— শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া ব্যাহত হলে মেধাবীরা বঞ্চিত হন, আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হারায় তার বিশ্বাসযোগ্যতা। তাই আদালতের এই সিদ্ধান্তে অনেকে স্বস্তি পেলেও, শিক্ষার্থীরা দ্রুত সুষ্ঠু সমাধান চান যাতে পড়াশোনার পরিবেশ অক্ষুণ্ন থাকে।
পাঠকের মন্তব্য