সৌদি আরবে এ বছর নিরাপদে পবিত্র হজ সম্পন্ন করার পর বাংলাদেশি হাজিদের কাছে ফেরত এসেছে ৮ কোটি ২০ লাখ টাকা। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ইতিহাসে এটি এক নজিরবিহীন সাফল্য, যা সম্ভব হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনুসের আন্তরিক সহযোগিতা ও নির্দেশনার ফলে।
ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন জানান, সৌদি আরবের প্রতিটি নিয়ম-কানুন যথাযথভাবে পালন, সময়মতো হজ ফি পরিশোধ, মক্কার কাছাকাছি আবাসনের ব্যবস্থা, কম খরচে হজ নিশ্চিতকরণ এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা প্রদানের কারণেই এই রেকর্ড সাফল্য এসেছে।
২০২৫ সালের হজ প্যাকেজ গত বছরের তুলনায় ৭৩ হাজার টাকা কমানো হয়। এ বছর প্রথমবারের মতো চালু হয় আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর ‘লাব্বাইক’ মোবাইল অ্যাপ, মোবাইল রোমিং সুবিধা এবং হজ প্রি-পেইড কার্ড। সরকারি অর্থ সাশ্রয়ের জন্য সীমিত জনবল দিয়ে হজ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়।
গত ১০ মাসে ধর্ম মন্ত্রণালয় শুধু হজ নয়, ধর্মীয় খাতে অসংখ্য উদ্যোগ নিয়েছে। মসজিদ, মাদ্রাসা, ঈদগাহ, কবরস্থান, মন্দির, শ্মশান, প্যাগোডা ও গীর্জাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সংস্কার ও উন্নয়নের জন্য কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দুস্থ ও অসহায় মানুষের জন্য প্রদান করা হয়েছে আর্থিক সহায়তা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ।
গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগসমূহ:
-ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে অনুদান ও সুদমুক্ত ঋণ প্রদান।
-নেপালের লুম্বিনিতে বাংলাদেশ বৌদ্ধ মঠ কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন।
-যাকাত ফান্ড থেকে প্রায় ১১ কোটি টাকা সহায়তা বিতরণ।
-সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ, মাদক, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে মসজিদভিত্তিক সচেতনতামূলক কর্মসূচি।
-ওয়াক্ফ সম্পত্তি ব্যবস্থাপনায় অটোমেটেড সিস্টেম চালুর উদ্যোগ।
-হজ অফিসকে অধিদপ্তরে উন্নীত করার প্রক্রিয়া শুরু।
এই সাফল্যের অংশীদার কেবল মন্ত্রণালয় নয়, বরং ৮৭ হাজারেরও বেশি হাজি, যারা শৃঙ্খলা ও নিয়ম মেনে পবিত্র হজ সম্পন্ন করেছেন।
বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এই সাফল্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে এবং ভবিষ্যতে হজ ব্যবস্থাপনায় এক নতুন মানদণ্ড স্থাপন করেছে।
পাঠকের মন্তব্য