![]()
নারী জাগরণ ও নারী অধিকার আন্দোলনের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার প্রয়াণের প্রায় শত বছর পার হলেও তার মতো আরেকজন নারী সৃষ্টি হয়নি। এই বিষয়টি নিয়ে গভীর আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) রোকেয়া দিবস উপলক্ষে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আমরা ১০০ বছর পরও আরেকজন রোকেয়া তৈরি করতে পারিনি। এটি আমাদের দুর্ভাগ্য। তিনি যে দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন, যে স্বপ্ন দেখিয়েছেন, আমরা তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে পারিনি। আজকের অনুষ্ঠান শুধু স্মরণের জন্য নয়, আমাদের ব্যর্থতাগুলো খুঁজে বের করার জন্য।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “রোকেয়ার স্বপ্নগুলো ছিল বিপ্লবী। তিনি চেয়েছিলেন নারীরা নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে অর্থ উপার্জন করতে শিখুক। আজ আমরা উদ্যোক্তা হওয়ার কথা বলছি—কিন্তু সে বহু আগেই তা বলে গেছেন। আমাদের দৈনন্দিন পথে রোকেয়ার আদর্শকে ধারন করা প্রয়োজন।”
অনুষ্ঠানে চার নারীর হাতে রোকেয়া পদক তুলে দেন মুহাম্মদ ইউনূস। পদকপ্রাপ্তরা হলেন:
-
নারীশিক্ষা (গবেষণা): রুভানা রাকিব
-
নারী অধিকার (শ্রম অধিকার): কল্পনা আক্তার
-
মানবাধিকার: নাবিলা ইদ্রিস
-
নারী জাগরণ (ক্রীড়া): ঋতুপর্ণা চাকমা
তিনি বলেন, “যে চারজন আজ পদক পেয়েছেন, তারা রোকেয়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করছে। তাদের পথচলা সারা জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এটি শুধু বাংলাদেশের নয়, সারা বিশ্বের জন্য উদাহরণ। আমরা ভাগ্যবান।”
বেগম রোকেয়া ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুরের মিঠাপুকুরে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৩২ সালের একই দিনে কলকাতার সোদপুরে প্রয়াণ করেন। তিনি নারীশিক্ষা, নারী ক্ষমতায়ন, বাল্যবিয়ে, যৌতুক, পণ প্রথা, ধর্মের অপব্যাখ্যা ও নারীর প্রতি অন্যায় আচরণের বিরুদ্ধে লড়েছেন। তার উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্মের মধ্যে রয়েছে মতিচূর, সুলতানা স্বপ্ন, পদ্মরাগ ও অবরোধবাসিনী, যা সমাজের কুসংস্কার ও নারীর বন্দিদশার বাস্তবতা উন্মোচন করেছে।
উক্ত অনুষ্ঠানকে ঘিরে প্রধান উপদেষ্টা মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন সংক্রান্ত নজরকাড়া বিষয়কও উল্লিখন করেন।
পাঠকের মন্তব্য