![]()
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) রাজধানীবাসীর দীর্ঘদিনের ভাড়া–সংকট, অযৌক্তিক বাড়িভাড়া বৃদ্ধি এবং ভাড়াটিয়া–বাড়িওয়ালার মধ্যে বিরোধ কমাতে নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। প্রতিষ্ঠানের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানিয়েছেন, ঢাকা শহরের কোন এলাকায় বাড়ি ভাড়া কত হওয়া উচিত, সেটি এলাকাভিত্তিকভাবে নির্ধারণ করে সিটি করপোরেশন একটি তালিকা প্রকাশ করবে।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) ডিএনসিসির নগর ভবনে আয়োজিত ‘ভাড়াটিয়া ও বাড়িওয়ালার অধিকার’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব তথ্য জানান।
১৯৯১ সালের আইন মানা হয় না—নতুন নির্দেশিকা আসছে ডিসেম্বরেই
প্রশাসক বলেন—
“বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৯১ সালে জারি হলেও এর বহু বিধান বাস্তবে মানা হচ্ছে না। তাই আমরা আইন অনুযায়ী ভাড়াটিয়া ও বাড়িওয়ালাদের জন্য নতুন নির্দেশিকা তৈরি করছি। ডিসেম্বরের প্রথমার্ধেই এটি প্রস্তুত হবে।”
তিনি জানান, নির্দেশিকায় ভাড়াটিয়ার অধিকার, নিরাপত্তা এবং বাড়িওয়ালার বাধ্যবাধকতা স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকবে।
ভাড়াটিয়া যেন নিজের ঘরে স্বাধীনভাবে আসা–যাওয়া করতে পারেন
মোহাম্মদ এজাজ বলেন—
“ভাড়াটিয়ারা তাদের ভাড়া বাসায় যখন ইচ্ছা তখন প্রবেশ বা বাহির হতে পারবেন। নিরাপত্তা, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, ভূমিকম্প সহনীয়তা—সব কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করেই ভাড়া দিতে হবে।”
তিনি আরও জানালেন, কোনো বাড়ির মালিক হোল্ডিং ট্যাক্স যথাযথভাবে প্রদান না করলে সেই বাড়ির জন্য সিটি করপোরেশন কোনো সেবা দেবে না।
এগ্রিমেন্টের নির্দিষ্ট ফরমেট থাকবে সিটি করপোরেশনের ওয়েবসাইটে
বৈঠকে প্রশাসক জানান—
“ভাড়াটিয়া–বাড়িওয়ালার মধ্যে যে এগ্রিমেন্ট হয়, সেটির একটি মানসম্মত দলিলের ফরমেট আমরা ডিএনসিসির ওয়েবসাইটে দেব। এতে উভয় পক্ষই আইনগতভাবে সুরক্ষিত থাকবে।”
তিনি রেসিডেন্সিয়াল এলাকায় কমার্শিয়াল কার্যক্রম বন্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দেন।
এলাকাভিত্তিক ভাড়া রেটকার্ড শিগগিরই
প্রশাসক জানান—
“আমরা এলাকাভিত্তিক ভাড়া নির্ধারণ করব। কোন এলাকায় সর্বোচ্চ ভাড়া কত হতে পারে—একটি ‘রেটকার্ড’ প্রকাশ করব।”
এতে ভাড়াটিয়ারা আর অযৌক্তিক বাড়িভাড়া বৃদ্ধির ভোগান্তিতে পড়বেন না বলে আশা করা হচ্ছে।
ভাড়াটিয়া জানতে পারবেন বাড়িওয়ালার হোল্ডিং ট্যাক্স
তিনি বলেন—
“অনেক মালিক ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে যে হারে ভাড়া নেন, সে অনুযায়ী হোল্ডিং ট্যাক্স দেন না। তাই ভাড়াটিয়ারা যেন মালিকের হোল্ডিং ট্যাক্স সম্পর্কে জানতে পারেন—এ ব্যবস্থা ডিএনসিসিই করবে।”
মানুষের মৌলিক চাহিদার অন্যতম ‘বাসস্থান’—এ অধিকার নিশ্চিত করা এবং ভাড়াটিয়াদের ন্যায্যতার প্রশ্নে ডিএনসিসির এই ঘোষণা রাজধানীর সাধারণ মানুষের মধ্যে আশা জাগিয়েছে।
পাঠকের মন্তব্য