![]()
তানজিয়া জামান মিথিলা—মিস ইউনিভার্সের ৭৪তম আসরে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। থাইল্যান্ডে চলছে প্রতিযোগিতা, আর সেই মঞ্চেই বাংলাদেশের পতাকা উঁচিয়ে ধরেছেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে সংবাদমাধ্যম—সবখানেই মিথিলাকে ঘিরে উচ্ছ্বাস, কারণ পিপলস চয়েস ভোটে তিনি গতকাল রাত ১১টা পর্যন্ত ছিলেন দ্বিতীয় অবস্থানে। শীর্ষে উঠতে পারলে তিনি সরাসরি মূল পর্বের সেরা ৩০-এ জায়গা করে নেবেন।
মিথিলার মিস ইউনিভার্স যাত্রা শুরু হয়েছিল অনেক আগেই। ২০২০ সালে তিনি ‘মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ’ নির্বাচিত হন। এরও আগে তিনি প্রতিষ্ঠিত হন র্যাম্প মডেল হিসেবে। ২০১৯ সালে ভারতীয় পরিচালক হায়দার খানের ‘রোহিঙ্গা’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে তার চলচ্চিত্র অভিষেক। একই বছর তিনি হন ‘ফেস অব বাংলাদেশ’ এবং ‘ফেস অব এশিয়া’। পরে ২০২০ সালে মুকুট ওঠে তার মাথায়—মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ।
তবে ২০২০ সালের বিশ্ব প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া হয়নি মহামারি ও সময় সংকটের কারণে। এরপর গত পাঁচ বছর নিজেকে আরও প্রস্তুত করেছেন মিথিলা। ২০২৫ সালে আবারও ‘মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ’ নির্বাচিত হয়ে তিনি যান থাইল্যান্ডে।
থাইল্যান্ডে প্রতিযোগিতার প্রতিদিনের ব্যস্ততা, রিহার্সাল, প্রস্তুতি এবং পারফরম্যান্সের মধ্যেই তিনি নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছেন দেশের মানুষের সঙ্গে। পরিবার, বন্ধু ও সহকর্মীদের উৎসাহ তাঁর মানসিক শক্তিকে আরও বাড়িয়েছে। ভোটের চাপে এগিয়ে যেতে যেতে তিনি প্রথমে পিপলস চয়েসে পাঁচে, পরে উঠে আসেন দুই নম্বরে—যা তাকে আলোচনার শীর্ষে পৌঁছে দেয়।
এ পথে বিতর্কও ছুঁয়ে গেছে তাকে। প্রতিযোগিতার নিয়ম অনুযায়ী সাঁতারের পোশাকে হাঁটার পর কিছু সমালোচনা হয়, তবে তাতে দমে যাননি মিথিলা—শান্ত থেকে নিজের কাজেই মনোযোগী থেকেছেন।
গতকাল আবারও নতুন করে আলোচনায় আসেন জাতীয় পোশাক প্রদর্শনীতে। ১২১ দেশের প্রতিযোগীদের সঙ্গে একই মঞ্চে তিনি হাঁটেন সাদা জামদানি শাড়িতে—যার মোটিফে ছিল জাতীয় ফুল শাপলা। শাড়িটি তৈরি করতে লেগেছে প্রায় ১২০ দিন, ডিজাইনার আফরিনা সাদিয়া সৈয়দার নকশায়। এর সঙ্গে মিলিয়ে ২২ ক্যারেট স্বর্ণের প্রলেপ দেওয়া জুয়েলারি ব্লাউজ এবং শাপলা থিমের সম্পূর্ণ গয়না সেটে আবির্ভূত হন তিনি। ১২ জন কারিগর দুই-আড়াই মাস পরিশ্রম করে তৈরি করেছেন পুরো সেট।
সমস্ত প্রস্তুতি, সমর্থন, দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাস মিলিয়ে এখন মিথিলা বাংলাদেশের মুখ হয়ে উঠেছেন বিশ্বমঞ্চে। লম্বা পথ পেরিয়ে তিনি কতটা এগোতে পারছেন—তার উত্তর পাওয়া যাবে ২১ নভেম্বর, মূল প্রতিযোগিতার ফল ঘোষণার দিন।
পাঠকের মন্তব্য