![]()
যদি বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নিতে হয়, তবে আমাদের মেয়ে, মা, বোন ও সহকর্মীদের ভয়ের মধ্যে বেঁচে থাকলে চলবে না—এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, প্রতিদিন অসংখ্য নারী শুধু কথা বলা, কাজ করা, পড়াশোনা করা বা স্বাধীনভাবে জীবনযাপন করার চেষ্টা করলেই হয়রানি, ভয়ভীতি, হুমকি ও সহিংসতার মুখোমুখি হন। এটি আমাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ নয়।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া একটি পোস্টে তিনি অনলাইন ও অফলাইনে নারীদের সুরক্ষায় বিএনপির পাঁচটি অগ্রাধিকারমূলক উদ্যোগ তুলে ধরেন।
তারেক রহমান বলেন, ডিজিটাল প্রযুক্তি আজ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ছড়িয়ে গেছে। বিশ্ব যেমন দ্রুত বদলেছে, বাংলাদেশও তার বাইরে নয়। তিনি উল্লেখ করেন, মাঝে মাঝে তিনি ও তাঁর স্ত্রী ভাবেন—তাদের বেড়ে ওঠা এবং আজকের দিনে তাদের মেয়ের বড় হওয়ার অভিজ্ঞতার পার্থক্য কতটা। সুযোগ যেমন বেড়েছে, ঝুঁকিও তেমনি বেড়েছে।
তিনি বলেন, নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ছাড়া এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। ঘর, কর্মক্ষেত্র, জনসমাগম বা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম—সবখানেই নারীদের নিরাপদ থাকতে হবে। এই লক্ষ্যেই বিএনপি পাঁচটি জরুরি অগ্রাধিকার বাস্তবায়নে কাজ করতে চায়।
বিএনপির পাঁচ অগ্রাধিকার
১. জাতীয় অনলাইন সুরক্ষা ব্যবস্থা
সাইবার বুলিং, হুমকি, ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসসহ ডিজিটাল হয়রানির অভিযোগ জানাতে নারীদের জন্য দ্রুত ও সহজ প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা হবে। ২৪/৭ হটলাইন, অনলাইন পোর্টাল এবং প্রশিক্ষিত কর্মী থাকবে এতে।
২. জনজীবনে নারীদের সুরক্ষা প্রোটোকল
সাংবাদিক, শ্রমিক, শিক্ষার্থী বা কমিউনিটি নেতাসহ বিভিন্ন পেশার নারীরা আক্রমণ বা ভয়ভীতির মুখে পড়লে পাবে স্পষ্ট নির্দেশিকা, দ্রুত আইনি ও ডিজিটাল সহায়তা এবং নিরাপদে অভিযোগ জানানোর ব্যবস্থা।
৩. ডিজিটাল সুরক্ষা শিক্ষা
স্কুল–কলেজ–বিশ্ববিদ্যালয়ে ওরিয়েন্টেশনের সময় ব্যবহারিক ডিজিটাল নিরাপত্তা শেখানো হবে। প্রশিক্ষিত শিক্ষকরা ‘নিরাপত্তা কেন্দ্রবিন্দু’ হিসেবে কাজ করবেন এবং বার্ষিক সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন তরুণদের ডিজিটাল জগতে আত্মবিশ্বাসী হতে সাহায্য করবে।
৪. সহিংসতা–হয়রানির বিরুদ্ধে কমিউনিটি-স্তরের শক্তিশালী উদ্যোগ
কমিউনিটি হেল্প ডেস্ক, নিরাপদ পরিবহন রুট, উন্নত রাস্তার আলো ও ট্রমা–সচেতন প্রতিক্রিয়াশীলদের মাধ্যমে প্রতিদিনের জীবন নারীদের জন্য আরও নিরাপদ করা হবে।
৫. নেতৃত্বে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি
নারীদের নেতৃত্ব বিকাশে প্রশিক্ষণ, পরামর্শক নেটওয়ার্ক এবং স্কুল ও কর্মক্ষেত্রে নেতৃত্বের প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা হবে। কারণ, নারী এগিয়ে গেলে—রাষ্ট্রও এগিয়ে যায়।
পোস্টের শেষাংশে তিনি বলেন, রাজনীতি, ধর্ম বা পরিচয় যাই হোক না কেন, বাংলাদেশি হিসেবে আমাদের সবাইকে একটি সত্যে এক হতে হবে—আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই যেখানে নারীরা নিরাপদ, সুরক্ষিত ও ক্ষমতায়িত। তাহলেই গড়ে উঠবে এক অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ। আসুন, আমাদের কন্যা ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে একসাথে কাজ করি।
পাঠকের মন্তব্য