
বেলজিয়ামভিত্তিক থিঙ্কট্যাঙ্ক ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ (আইসিজি) বলেছে, মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ড পাওয়ার পর শেখ হাসিনার বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফিরে আসার সম্ভাবনা এখন ‘অত্যন্ত ক্ষীণ’। তাদের মতে, তিনি যতদিন আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণ ছাড়তে রাজি না হবেন, ততদিন দলটির রাজনীতিতে পুনরায় দাঁড়ানোও কঠিন হবে।
জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত নৃশংসতার দায়ে ১৭ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পর আইসিজি এ বিশ্লেষণ তুলে ধরে। আইসিজির বাংলাদেশবিষয়ক সিনিয়র কনসালট্যান্ট টমাস কিয়ান জানান, এই রায়কে বাংলাদেশের জনগণ স্বাগত জানাবে, কারণ ২০২৪ সালের জুলাই–আগস্টে বিক্ষোভকারীদের ওপর সহিংসতার দায় নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
জাতিসংঘের তদন্তের বরাত দিয়ে আইসিজি জানায়, রাজনৈতিক নির্দেশেই দমনপীড়নে প্রায় ১,৪০০ মানুষ নিহত হয়। ট্রাইব্যুনালের বিচারেও এ–সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রমাণ—যেমন শেখ হাসিনার আলোচনার অডিও রেকর্ডিং ও সাবেক পুলিশপ্রধানের সাক্ষ্য—উন্মোচিত হয়েছে।
তবে আইসিজি বিচার প্রক্রিয়াটি পুরোপুরি সমালোচনামুক্ত নয় বলে স্বীকার করেছে। অনুপস্থিতিতে বিচার, দ্রুত শুনানি এবং প্রতিরক্ষা দলের সীমিত সুযোগ–সুবিধা সুষ্ঠু বিচার নিয়ে প্রশ্ন তোলে—তবে এসব সমালোচনা শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ডকে লঘু করে না।
আইসিজি বলছে, রায়টির রাজনৈতিক প্রভাব গভীর। শেখ হাসিনা রাজনীতিতে ফিরতে পারবেন—এ সম্ভাবনা খুব কম। আর তিনি নেতৃত্ব ছাড়তে রাজি না থাকলে আওয়ামী লীগেরও রাজনীতিতে পুনরায় ফিরে আসা কঠিন। ২০২৬ সালের নির্বাচনের আগে সাম্প্রতিক বোমা হামলা এবং দলটির ডাকা দেশব্যাপী ‘লকডাউন’ দেশকে উদ্বেগে ফেলেছে। তাই আওয়ামী লীগের উচিত সহিংসতা এড়িয়ে চলা এবং অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত তাদের সমর্থকদের বিরুদ্ধে কঠোর দমনপীড়ন না চালানো।
পাঠকের মন্তব্য