![]()
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরের ছতরপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শনিবার (৩০ আগস্ট) রাতের অনুষ্ঠিত ‘‘উঠানে নতুন সংবিধান’’ শীর্ষক বৈঠকে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ উপস্থিত হয়ে স্থানীয় জনসাধারণকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেন।
হাসনাত জানান, বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা তার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রেখেছেন। এছাড়াও হাসনাত জানিয়েছেন, রুমিন তার জন্য কিছু উপহার পাঠিয়েছেন। তিনি বলেন,
“রুমিন ফারহানার সঙ্গে আমাদের একটি মনোমালিন্য হয়েছিল। আমরা এসেছি, উনি ওনার লোক পাঠিয়েছেন যে আমাদের এখানে কোনো সমস্যা হচ্ছে কিনা। আমাদের জন্য উনি কিছু উপহারও পাঠিয়েছেন। এটা আমাদের জন্য পজিটিভ বার্তা। আমাদের অবশ্যই ওয়েলকাম জানানো উচিত।”
হাসনাত আরও বলেন,
“আমাদের মধ্যে ভিন্নমত থাকবে, ভিন্নমত হচ্ছে গণতন্ত্রের শক্তি। অন্যদিকে সহিংসতা হচ্ছে গণতন্ত্রের শত্রু। কেউ আমাদের আক্রোশমূলক কথা বললে আমরা গণতান্ত্রিকভাবে তার জবাব দেব। কেউ যদি আমাদের ইতিবাচক বার্তা দেয়, আমাদের অবশ্যই গ্রহণ করা উচিত।”
পূর্বেকার মনোমালিন্য ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
গত ২৪ আগস্ট, নির্বাচন কমিশনে (ইসি) ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত শুনানিতে হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং রুমিন ফারহানা-এর মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এর জেরে হাসনাত রুমিনকে সামাজিকভাবে “বিএনপির আওয়ামীবিষয়ক সম্পাদক” আখ্যা দেন।
এরপর, ২৫ আগস্ট রুমিন ফারহানা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানান। তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তিনি লেখেন,
“এটা ওই ফকিন্নির বাচ্চাটা না, যে আমাকে আওয়ামীবিষয়ক সম্পাদক বলেছে?”
সাথে হাসনাতের ছাত্রলীগ-সংক্রান্ত কিছু ছবি ও স্ক্রিনশটও যুক্ত করেন।
হাসনাত অবশ্য এই মনোমালিন্যকেই ইতিবাচক বার্তা হিসেবে উপস্থাপন করছেন। তার বক্তব্য থেকে বোঝা যায়, রাজনৈতিক ভিন্নমতের মধ্যেও সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ সমঝোতা সম্ভব।
মানবিক ও সামাজিক প্রতিফলন
স্থানীয় জনসাধারণের কাছে হাসনাতের বার্তা ছিল উদ্দীপক ও সহমর্মী। তিনি জানিয়েছেন,
“ভিন্নমত থাকলেই গণতন্ত্র শক্তিশালী হয়। সহিংসতা নয়, সংলাপই দেশকে এগিয়ে নেবে।”
স্থানীয়রা বলেন, এই ধরনের সংলাপ রাজনীতিতে মানবিকতার প্রাধান্য নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে। রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকলেও শান্তিপূর্ণ সমঝোতার মাধ্যমে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এগোতে পারে।
উপসংহার
হাসনাত আব্দুল্লাহ ও রুমিন ফারহানার এই ছোট রাজনৈতিক সংলাপ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রাজনৈতিক পরিবেশকে ইতিবাচক দিকেই প্রভাবিত করেছে। এটি প্রমাণ করে, রাজনৈতিক ভিন্নমতের মধ্যেও সংলাপ, মানবিক আচরণ এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বজায় রাখা সম্ভব।
এ ধরনের উদ্যোগ দেশের রাজনীতি ও সমাজে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি, সংহতি ও ন্যায়ের বার্তা বহন করে।
পাঠকের মন্তব্য