
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে, যা নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
ফখরুল বলেন, “একটি রাজনৈতিক দল জোট গঠন করে চাপ তৈরি করছে যে নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজন করতে হবে। আমরা বলেছি, গণভোট অবশ্যই নির্বাচনের দিনেই হতে হবে। দুটি ভোট করার ফলে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় বৃদ্ধি পাবে এবং মূল নির্বাচনের গুরুত্ব হারাবে। অথচ অন্তর্বর্তী সরকার এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে, যা নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “নির্বাচনের আগে যারা গণভোটের দাবি করছে, তারা এর মাধ্যমে নির্বাচনকে ব্যাহত করার ষড়যন্ত্র করছে।”
শুক্রবার বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত র্যালিপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ফখরুল।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি কড়া হুশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, “খুব স্পষ্টভাবে বলতে চাই, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ষড়যন্ত্র চলছে। নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠিত হতে হবে এবং সেই নির্বাচন হবে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে। অন্যথায় বাংলাদেশের মানুষ তা মেনে নেবে না।”
তারেক রহমানকে ‘আধুনিক গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতা’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “সংস্কারের জন্য ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি সেই সংস্কারের কাজ শুরু করে, আমরা তাদের পূর্ণ সমর্থন জানাই। গত এক বছর ধরে তারা সংস্কারের সড়ক তৈরির কাজ করেছে। ১৭ অক্টোবর বিভিন্ন দলের মধ্যে যে ঐকমত্য হয়েছে, তাতেও আমরা স্বাক্ষর করেছি।”
ফখরুল অভিযোগ করেন, “হঠাৎ এক উপদেষ্টা প্রেস কনফারেন্স করে জানালেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সাত দিন সময় দেওয়া হবে। এতদিন ঐকমত্য কমিশনে যে কাজ হয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত কোথায় গেল? অসংখ্য টাকা খরচ করে কাজটি হয়েছে, কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি।”
তিনি যোগ করেন, “আমরা এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব এবং ইনশাআল্লাহ বিজয়ী হয়ে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলব।”
যুবকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “যে ত্যাগ আপনি স্বীকার করেছেন, আমাদের হাজারো নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন; তাদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সামনে এগিয়ে যান এবং বিজয় নিশ্চিত করুন।”
র্যালিতে জামায়াতের ইঙ্গিত করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, “বিএনপি মাঠে নামলে আপনাদের কাউকে খুঁজেও পাওয়া যাবে না। ৭১ সালে যেমন জাতিকে বিভ্রান্ত করেছিলেন, এখনো তাই করছেন। সময় থাকতেই জাতির কাছে ক্ষমা চান।”
র্যালিতে নেতাকর্মীরা বিভিন্ন ব্যানার, প্ল্যাকার্ড, ট্রাক ও সাজানো গাড়ি নিয়ে অংশ নেন। নয়াপল্টন এলাকায় যান চলাচল বন্ধ থাকে এবং পুরো এলাকা উৎসবমুখর পরিবেশে সাজানো ছিল।
ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর, জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষে বিএনপি এই র্যালির আয়োজন করে। সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে বিকেল সোয়া ৪টায় নয়াপল্টন থেকে র্যালি শুরু হয়।
পাঠকের মন্তব্য