বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, তাঁর দল কোনও জোটে যাচ্ছে না, বরং নির্বাচনি সমঝোতার পথে হাঁটছে। তিনি বলেন, “আমরা কোনও জোট করার সিদ্ধান্ত নিইনি, জোট করবোও না। আমরা নির্বাচনি সমঝোতা করবো। শুধু ইসলামি দল না, দেশপ্রেমিক ও প্রতিশ্রুতিশীল যারা আছেন, তারাও এতে যুক্ত হচ্ছেন।”

বুধবার (৫ নভেম্বর) সকালে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
তৃতীয়বারের মতো জামায়াতে ইসলামীর আমির নির্বাচিত হওয়ার পর সিলেটে ফেরার পথে নেতাকর্মীরা বিমানবন্দরে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করেন।

‘গণভোট আগে না হলে জাতীয় নির্বাচন অর্থহীন’

গণভোট ইস্যুতে জামায়াতের অবস্থান পরিষ্কার করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন,

“গণভোট আগে না হলে কিসের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন হবে? তাই আমরা চাই গণভোট আগে হোক এবং জুলাই সনদ আইনি ভিত্তি পাক।”

তিনি আরও বলেন, জনগণের অংশগ্রহণ ও রাজনৈতিক বৈধতা নিশ্চিত করতেই গণভোটকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

‘সবাইকে নিয়ে দেশ গড়তে চাই’

সাংবাদিকদের প্রশ্নে, ‘সবাই’ বলতে আওয়ামী লীগকেও বোঝানো হয়েছে কি না—এমন প্রশ্নে জামায়াতের আমির বলেন,

“আওয়ামী লীগ নিজেরাই তো নির্বাচন চায়নি। আপনারা কি তাদের ওপর জোর করে নির্বাচন চাপিয়ে দেবেন? তারা নির্বাচনে বিশ্বাসী, সেটা তারা প্রমাণ করতে পারেনি। যেটা তারা চায় না, সেটা তাদের ওপর চাপিয়ে দিলে জুলুম হবে না?”

তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আমরা সবাইকে নিয়ে দেশ গড়তে চাই। নির্বাচন হবে জনগণের ইচ্ছায়, জোর করে নয়।”

পি আর পদ্ধতি ও ফেব্রুয়ারির নির্বাচন প্রসঙ্গে

গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় প্রপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পি আর) পদ্ধতি চালুর দাবি পুনর্ব্যক্ত করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন,

“গণতন্ত্রের ফর্মুলা হলো—একাধিক দল ও একাধিক আদর্শের সহাবস্থান। আমরা মনে করি, পি আর পদ্ধতির দাবি শ্রেষ্ঠ দাবি। জনগণ যদি মনে করে, ভবিষ্যতে যেন ফ্যাসিবাদ আর ফিরে না আসে, তবে এই পদ্ধতি প্রয়োজন।”

তিনি আরও বলেন,

“আমরা যা-ই করি, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে করবো। জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছু করবো না। সবাইকে নিয়ে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আদায় করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ। নির্বাচন দেরি হলে বিভিন্ন ধরনের আশঙ্কা তৈরি হবে।”

মূল পয়েন্ট সংক্ষেপে

• জামায়াত জোটে নয়, নির্বাচনি সমঝোতায় যাচ্ছে

• গণভোট আগে, তারপর জাতীয় নির্বাচন দাবি

• আওয়ামী লীগকে জোর করে নির্বাচনে আনা ‘জুলুম’ বলে মন্তব্য

• পি আর পদ্ধতি বাস্তবায়নে অঙ্গীকার

• ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আদায়ের ঘোষণা