ভারতের কুর্নুল জেলায় হায়দ্রাবাদ থেকে বেঙ্গালুরুগামী একটি যাত্রীবাহী বাসের ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, বাসটিতে অন্তত ৪৩ জন যাত্রী ছিলেন। দুর্ঘটনা ঘটে কুর্নুল জেলার উলিন্দাকোন্ডার কাছে।
বাসটি মধ্যরাতে হায়দ্রাবাদ থেকে যাত্রা শুরু করে এবং রাত সাড়ে ৩টার দিকে জাতীয় সড়ক ৪৪ (এনএইচ-৪৪)-এর কুর্নুলের কাছে পৌঁছালে একটি মোটরসাইকেলের সাথে সংঘর্ষে পড়ে। পুলিশের ধারণা, মোটরসাইকেলটি বাসের নিচে আটকে যাওয়ায় আগুনের সূত্রপাত ঘটে।
দুর্ঘটনার কারণ ও প্রাথমিক তথ্য
কুর্নুলের কালেক্টর ড. এ সিরি জানান, দুর্ঘটনার সময় বাসের দরজা জ্যাম হয়ে যায়। এ কারণে কয়েক মিনিটের মধ্যেই বাসটি আগুনে পুড়ে যায়।
কুর্নুলের পুলিশ সুপার বিক্রান্ত পাতিল বলেন—
“রাত ৩টার দিকে কাবেরী ট্রাভেলসের একটি বাস হায়দ্রাবাদ থেকে বেঙ্গালুরু যাচ্ছিল। এটি একটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দিলে সেটি বাসের নিচে আটকে যায়। সম্ভবত সেখান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়।”
ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি টিম দুর্ঘটনার সঠিক কারণ খুঁজে বের করার জন্য ঘটনাস্থলে কাজ করছে। বাসটি এসি হওয়ায় যাত্রীদের অনেকের জানালা ভেঙে বের হতে হয়েছে, যারা তা করতে পেরেছে তারা বেঁচে গেছেন।
হতাহতের পরিসংখ্যান ও পরিস্থিতি
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী—
-
নিহত: ১৯ জন
-
উদ্ধার/চিকিৎসাধীন: ২৩ জন যাত্রী
-
আহতদের মধ্যে অনেকে বাস থেকে লাফিয়ে পড়ার কারণে আহত।
-
যাত্রী তালিকা অনুযায়ী, চালক ও কর্মীসহ কমপক্ষে ৪০ জন ছিলেন।
-
দুর্ঘটনার সময় বেশ কয়েকজন যাত্রী ঘুমিয়ে ছিলেন, যার কারণে অনেকেই আগুন থেকে বের হতে পারেননি।
এই ভয়াবহ ঘটনায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় নেতারা শোক প্রকাশ করেছেন।
মানবিক দৃষ্টিকোণ ও সতর্কবার্তা
এই দুর্ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে—
-
যাত্রীবাহী বাসে সঠিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকা কতটা জরুরি।
-
যাত্রীদের সচেতনতা ও দ্রুত উদ্ধার প্রক্রিয়া জীবন রক্ষা করতে পারে।
-
অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও যানবাহনের রক্ষণাবেক্ষণ অবহেলার কারণে ঘটে এমন দুর্ঘটনা দুর্নীতি ও অনিয়মের ঝুঁকি বৃদ্ধির প্রমাণ।
উপসংহার
হায়দ্রাবাদ-বেনগালুরু রুটে বাসের এই অগ্নিকাণ্ড একটি দুর্ভাগ্যজনক মানবিক বিপর্যয়, যা যাত্রীদের নিরাপত্তা, জরুরি প্রতিকার ও সরকারের তৎপরতার গুরুত্বকে পুনর্নির্ধারণ করেছে।
দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবার ও আহতদের প্রতি সমবেদনা ও সহমর্মিতা জানানো হচ্ছে।
পাঠকের মন্তব্য