জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল বলেছেন, বর্তমান সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে এখন প্রায় সব রাজনৈতিক দলই প্রশ্ন তুলছে। তাঁর ভাষায়, “জামায়াত প্রশ্ন করছে, ইসলামী আন্দোলন প্রশ্ন করছে, বিএনপি প্রশ্ন করছে, এমনকি এনসিপিও এখন সরকারের কর্মকাণ্ডে অসন্তুষ্ট।”
সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত এক বিশ্লেষণধর্মী ভিডিওতে তিনি বলেন, “যেসব দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে, তাদেরই যদি সরকারের ওপর আস্থা না থাকে, তাহলে এই সরকার কীভাবে নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করবে?”
মাসুদ কামাল মন্তব্য করেন, নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ততই অভিযোগ–পাল্টা অভিযোগ বাড়ছে। তাঁর মতে, “এটি এখন অনেকটা কাদা ছোড়াছুড়ির মতো হয়ে গেছে, যা সময়ের সঙ্গে আরও তীব্র হচ্ছে।”
তিনি বলেন, নির্বাচনের সময় কে কোন পদে থাকবে, কে কতটা প্রভাব বিস্তার করবে—এসব বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ ও বদলি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অবিশ্বাস তৈরি হয়েছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করছে।
জামায়াত ইসলামী প্রসঙ্গে মাসুদ কামাল জানান, সম্প্রতি দলটি ‘পাঁচ দফা দাবি’ নিয়ে আন্দোলনে নেমেছে। এই দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে গণভোট, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (PR) পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ সুষ্ঠু ভোট নিশ্চিতের বিভিন্ন প্রস্তাব। জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের অভিযোগ করেছেন, সরকারে থাকা কয়েকজন উপদেষ্টা তাঁদের দাবিগুলো শোনার বদলে ‘ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন’, এমনকি তাদের কাছে সেই ষড়যন্ত্রের ভয়েস রেকর্ডও আছে বলে দাবি করেন তিনি।
মাসুদ কামাল বলেন, জামায়াতের আপত্তির মূল কেন্দ্রবিন্দু হলো জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে সাম্প্রতিক পরিবর্তন। তাহেরের অভিযোগ অনুযায়ী, সরকারের চার-পাঁচজন উপদেষ্টা নাকি “একটি বিশেষ দলের পক্ষে সব নিয়োগ নিয়ন্ত্রণ করে সরকারকে দলীয় রূপ দিতে চাচ্ছেন।”
তিনি আরও বলেন, এসব অভিযোগ সরকার ও অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার আস্থার সংকট আরও গভীর করছে। তাঁর মতে, এই অনাস্থা নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
পাঠকের মন্তব্য